বিশ্বব্যাপী মন্দার মধ্যে আরও বেশি সংখ্যক কোম্পানি কর্মচারীদের ছাঁটাই করছে। এখনও পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে অন্তত ৮৫৩টি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা প্রায় ১,৩৭,৪৯২ জন কর্মী ছাঁটাই করেছে এবং মন্দার আশঙ্কার মধ্যেই এই সংখ্যাটি কেবলই বেড়ে চলেছে।
প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ছাঁটাইয়ের ক্রাউডসোর্স ডাটাবেস layoffs.fyi-এর তথ্য অনুসারে, ১,৩৮৮টি টেক কোম্পানি কোভিড-১৯ শুরু হওয়ার পর থেকে মোট ২,৩৩,৪৮২ জন কর্মীকে ছাঁটাই করেছে। যদিও এখনও পর্যন্ত ২০২২ সাল তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের জন্য সবচেয়ে খারাপ ছিল।
নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত মেটা (Meta), টুইটার (Twitter), সেলসফোর্স (Salesforce), নেটফ্লিক্স (Netflix), সিসকো (Cisco), রোকু (Roku) এবং অন্যান্য সংস্থা ব্যাপক স্তরের চাকরির ছাঁটাইয়ে মার্কিন প্রযুক্তি খাতের ৭৩,০০০-এরও বেশি কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে।
ক্রাঞ্চবেস অনুসারে রবিনহুড (Robinhood), গ্লসিয়ার (Glossier) এবং বেটার (Better) সহ বেশ কয়েকটি প্রযুক্তি কোম্পানি ২০২২ সালে উল্লেখযোগ্যভাবে তাদের কর্মী ছাঁটাই করেছে।
অ্যামাজন (Amazon) এবং পিসি এবং প্রিন্টার প্রধান এইচপি ইঙ্ক (HP Inc)-এর মতো বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলিতেও ব্যাপক হারে ছাঁটাই হয়েছে। আগামী দিনে এই দুই সংস্থা যথাক্রমে ১০ হাজার এবং ৬ হাজার কর্মী ছাঁটাই করবে বলে জানা গেছে৷
অ্যামাজনের সিইও অ্যান্ডি জ্যাসি (Andy Jassy) কর্মীদের সতর্ক করে জানিয়েছেন, যেহেতু এখন সামঞ্জস্য রক্ষা করে চলা হচ্ছে তাই ২০২৩ সালের প্রথম দিকে কোম্পানিতে আরও ছাঁটাই হবে।
বৃহৎ হারে চাকরি ছাঁটাইয়ের ফলে বেশ কয়েকটি বিভাগে আঘাত আসতে চলেছে। বিশেষ করে অ্যালেক্সা (Alexa) ভার্চুয়াল সহকারী ব্যবসা যেটি এই বছর ১০ বিলিয়ন ডলার হারাবে বলে জানা গেছে। কারণ এই সংস্থা এখনও আয়ের পথ তৈরি করতে পারেনি।
অ্যালফাবেট (Alphabet), গুগলের (Google) মূল সংস্থা, প্রায় ১০ হাজার "কম কর্মদক্ষতা" সম্পন্ন কর্মী বা তার কর্মীদের ৬ শতাংশকে ছাঁটাই করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
দ্য ইনফরমেশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুগল একটি নতুন র্যাঙ্কিং এবং কর্মক্ষমতা উন্নতির পরিকল্পনার মাধ্যমে ১০ হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করার পরিকল্পনা করেছে।
ভারতে, প্রায় ৪৪টি স্টার্ট আপের ১৬ হাজার কর্মচারীকে চলে যেতে বলা হয়েছে। যার নেতৃত্বে আছে BYJU'S, Unacademy, এবং Vedantu-এর মতো edtech কোম্পানি রয়েছে, কারণ তহবিলে ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
অন্যান্য টেক স্টার্টআপ এবং ইউনিকর্ন যারা ভারতে কর্মীদের ছাঁটাই করেছে তাদের মধ্যে রয়েছে Ola, Cars24, Meesho, LEAD, MPL, Innovaccer, Udaan এবং আরও বেশ কিছু সংস্থা।
ইতিমধ্যে, হাজার হাজার চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীকেও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, যা ২০২২ কে প্রযুক্তি খাতে কর্মীদের জন্য সবচেয়ে কঠিন বছর হিসাবে পরিণত করেছে।
ফ্লিপকার্টের সিইও কল্যাণ কৃষ্ণমূর্তি সতর্ক করে জানিয়েছেন, স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের তহবিলের ঘাটতি আরও ১২ থেকে ১৮ মাস স্থায়ী হতে পারে এবং শিল্প "অনেক অশান্তি এবং অস্থিরতার সম্মুখীন হতে পারে"।
রেজরপে-র ব্যবসায়িক ব্যাঙ্কিং প্ল্যাটফর্ম RazorpayX Payroll-এর বার্ষিক রিপোর্ট অনুসারে, ভারতীয় স্টার্টআপগুলি সরাসরি নিয়োগে কাটছাঁটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং স্থায়ী কর্মচারীদের নিয়োগ গত ১২ মাসে উল্লেখযোগ্য ৬১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
PwC ইন্ডিয়ার এক সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুসারে, ভারতের মাত্র দুটি স্টার্টআপ, Shiprocket এবং OneCard, জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ের মধ্যে ইউনিকর্ন স্ট্যাটাস (মূল্যায়ন $1 বিলিয়ন এবং তার বেশি) অর্জন করেছে।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।