শুধু বদলি নয়, কর্মীদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করছে ভারতের অন্যতম এডুটেক কোম্পানি বাইজুস (BYJU'S)। শনিবার, এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনা হয়েছে কর্ণাটক স্টেট আইটি/আইটিইএস এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের পক্ষ থেকে (KITU)।
সম্প্রতি, কেরালার তিরুবনন্তপুরমের কর্মীদের বেঙ্গালুরুতে বদলি করার কথা জানিয়েছে বাইজুস। এ নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। সেই রেশ না কাটতেই জোর করে (হুমকির সুরে) কর্মীদের পদত্যাগ করানোর অভিযোগ উঠল বাইজুসের বিরুদ্ধে।
KITU সেক্রেটারি সুরাজ নিদিয়াঙ্গা (Sooraj Nidiyanga) জানিয়েছেন, 'অনেক কর্মচারীদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। তাদের বলা হয়েছে যে, তাঁরা যদি নিজে থেকে পদত্যাগ না করেন, তাহলে কোম্পানি থেকে তাদের বরখাস্ত করা হবে।'
অভিযোগের সুরে তিনি জানান, 'এমনকি, পদত্যাগ না করলে মানবসম্পদ বিভাগ (HR) থেকে বাইজুসের কর্মচারীদের ভবিষ্যতে চাকরির সম্ভাবনা নষ্ট করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।'
সুরাজ নিদিয়াঙ্গা বলেন, 'যখন একজন কর্মচারী ম্যানেজার, সুপারভাইজার বা বোর্ড সদস্যদের চাপে চাকরি ছেড়ে দেয়, তখন এটিকে বাধ্যতামূলক পদত্যাগ বলা হয়। বাধ্যতামূলক পদত্যাগ কখনই স্বেচ্ছায় ঘটে না।'
বাইজু'স কর্মীদের পদত্যাগ করার জন্য একাধিক কৌশল অবলম্বন করছে বলে অভিযোগ করেছেন সোরজ। তিনি জানান, 'এই ছাঁটাই নিয়ে কোনও লিখিত প্রমাণ রাখতে চাইছে না বাইজুস। পদত্যাগ করার জন্য প্রতিটি কর্মচারীর সঙ্গে আলাদা করে যোগাযোগ করছে HR বিভাগ।'
সাধারণত, চাকরীরত অবস্থায় একজন কর্মচারী পদত্যাগ করলে, কোম্পানি থেকে তাঁকে ক্ষতিপূরণ (Compensates) দিতে হয়। আর, কোম্পানির পক্ষ থকে বরখাস্ত করা হলে, নিয়োগকর্তাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে তাদের বেতন দিতে হয়। যা বিচ্ছেদ বেতন (Severance pay) নামে পরিচিত। যাতে কর্মচারীরা অন্য কোথাও কাজ খোঁজার আগে নিজেদের খরচ মেটাতে এই অর্থ ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু, কর্মচারীরা নিজে থেকে পদত্যাগ করলে, তাদেরকে কোনো বিচ্ছেদ বেতন দেওয়া হয় না।
KITU সেক্রেটারি সুরাজ নিদিয়াঙ্গা জানান, 'কোনও সংস্থায় ১০০ জনের বেশি কর্মচারীকে ছাঁটাই করতে গেলে, শিল্প বিরোধ আইন (The Industrial Disputes Act) অনুসারে সরকারি অনুমোদন প্রয়োজন। ছাঁটাই শুধুমাত্র বিশেষ পরিস্থিতিতে এবং শিল্প বিরোধ আইনে বর্ণিত নিয়ম অনুসারে অনুমোদিত।'
তিনি আরও জানান,'১৯৪৭ সালের শিল্প বিরোধ আইনের ২(এ) ধারা (অন্যায্য শ্রম অনুশীলন) অনুসারে নিয়োগকর্তার পক্ষ থেকে একজন কর্মচারীকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা একটি অপরাধ।'
তাঁর মতে, 'একজন কর্মচারীর আইনি অধিকার আছে যে, তিনি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করবেন। '
GOOGLE NEWS-এ আমাদের ফলো করুন