
ইরানের সঙ্গে পেট্রোলিয়াম ও পেট্রোকেমিক্যাল পণ্যের বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগে ৬টি ভারতীয় সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল আমেরিকা। মার্কিন প্রশাসনের মতে, এই সংস্থাগুলি "Executive Order 13846" অনুযায়ী আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করেছে।
বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর এক বিবৃতিতে জানায়, বিশ্বের ২০টি সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, যার মধ্যে ৬টি ভারতীয় কোম্পানি রয়েছে।
দফতরের মুখপাত্র বলেন, "ইরান সরকার এখনও মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত জিইয়ে রেখে নিজের স্বৈরশাসন চালাচ্ছে ও সন্ত্রাসবাদে অর্থ জোগাচ্ছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে আমেরিকা সেই আয়ের পথ বন্ধ করার চেষ্টা করছে, যা এসব কার্যকলাপে ব্যবহৃত হয়।"
নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ভারতীয় সংস্থাগুলি:
১. Alchemical Solutions Private Limited – ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ৮৪ মিলিয়ন ডলারের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য আমদানির অভিযোগ।
২. Global Industrial Chemicals Limited – ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে ৫১ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের ইরানি মিথানল ও অন্যান্য পণ্য আমদানির অভিযোগ।
৩. Ramniklal S Gosalia And Company – মিথানল ও টলুইনসহ প্রায় ২২ মিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানির অভিযোগ।
৪. Jupiter Dye Chem Private Limited – ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৪৯ মিলিয়ন ডলারের ইরানি টলুইনসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানির অভিযোগ।
৫. Persistent Petrochem Private Limited – সংযুক্ত আরব আমিরাশাহীর Bab Al Barsha-সহ একাধিক উৎস থেকে ১৪ মিলিয়ন ডলারের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য আমদানির অভিযোগ (অক্টোবর ২০২৪ - ডিসেম্বর ২০২৪)।
৬. Kanchan Polymers – Tanais Trading-এর মাধ্যমে ১.৩ মিলিয়ন ডলারের ইরানি পলিথিনসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানির অভিযোগ।
এই সংস্থাগুলিকে Executive Order 13846-এর section 3(a)(iii) অনুযায়ী "ইচ্ছাকৃতভাবে ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য কেনা-বেচায় জড়িত" থাকার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে।
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বা মার্কিন নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণাধীন যে কোনও সম্পত্তি বা স্বার্থ ওই কোম্পানিগুলির থাকলে তা এখন ‘ব্লক’ করে দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে, যদি কোনও কোম্পানি এই সংস্থাগুলির ৫০% বা তার বেশি মালিকানা রাখে, তাহলে সেটিও নিষিদ্ধ তালিকায় পড়বে।
মার্কিন অর্থ দফতরের OFAC (Office of Foreign Assets Control) স্পষ্ট জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকা অবস্থায় মার্কিন নাগরিক বা সংস্থাগুলি এই কোম্পানিগুলির সঙ্গে কোনো আর্থিক বা পণ্য লেনদেন করতে পারবে না, যতক্ষণ না বিশেষ অনুমতি থাকে।
এই ঘটনার পর এখনও পর্যন্ত ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এই পদক্ষেপ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কে কিছুটা টানাপোড়েন তৈরি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে ভারতের উপর ২৫% শুল্ক আরোপের পর দুই দেশের বাণিজ্য কোন পর্যায়ে যায় সেটাই দেখার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন