

গত শনিবার বিশ্বকাপজয়ী বাঙালি মহিলা ক্রিকেটার রিচা ঘোষের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মমতা ব্যানার্জী বলেছিলেন, বিখ্যাত সাঁতারু বুলা চৌধুরী তাঁর কাছে অর্জুন পুরস্কার চেয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরই তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকর প্রশ্ন, কেউ চাইলেই কি তাঁকে অর্জুন পুরস্কার দেওয়া যায়? এবার এই নিয়ে মুখ খুললেন বুলা চৌধুরী নিজেই।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেন, 'আমি তখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলাম। বুলা চৌধুরী একদিন এলো। বললো দিদি আমার অর্জুন চাই। আমি বললাম তোমাকে দেবো কিন্ত একটা শর্ত আছে। ৮ মাস তুমি প্রেম করবে না। আসন্ন কমনওয়েলথে তুমি ৮ টার মধ্যে ৬ টায় পদক জিতবে। ও কিন্তু কথা রেখেছিল।'
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে পিপলস রিপোর্টারকে বুলা চৌধুরী বলেন, 'কী বলব বলুন তো? উনি যদি পাগল হয় আমি তো পাগল নই। ফালতু কথার উত্তর কী দেবো? চেয়ে কি অর্জুন পাওয়া যায়? চেয়ে যদি অর্জুন পাওয়া যেত তাহলে ভারতে অনেকে আছেন তাঁদেরও দেওয়া হত। আমার কাজ খেলাধুলো করা। আমি সেটা করেছি। আমার টার্গেট ছিল ভারতের হয়ে পদক আনা, ইতিহাস তৈরী করা। আমি ইতিহাস তৈরী করেছি। আমাকে সবাই মনে রাখবে। আমি মরে গেলেও মনে রাখবে।'
বিভিন্ন জুনিয়র এবং জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপও জিতেছিলেন বুলা চৌধুরী। ১৯৯১ সালের দক্ষিণ এশিয়ান ফেডারেশন গেমসে ছ'টি সোনা জিতেছিলেন। ১৯৮৪ সালে তিনি ১০০ মিটার বাটারফ্লাই ১:০৬.১৯ মিনিটে শেষ করে জাতীয় রেকর্ড করেছিলেন। ১৯৮৬ সালে সিওল এশিয়াডে বুলা ১০০ মিটার বাটারফ্লাই ১:০৫.২৭ মিনিটে শেষ করেছিলেন। ২০০ মিটার বাটারফ্লাই ২:১৯.৬০ মিনিটে শেষ করে আর একটি রেকর্ড করেছিলেন তিনি।
বুলা ১৯৮৯ সালে লং-ডিসট্যান্স সাঁতার শুরু করেছিলেন এবং সেই বছরই ইংলিশ চ্যানেল পার করেছিলেন। ১৯৯৬ সালে তিনি ৮১ কিলোমিটার মুর্শিদাবাদ লং-ডিসট্যান্স সাঁতার প্রতিযোগিতা জিতেছিলেন। ১৯৯৯ সালে আবার ইংলিশ চ্যানেল পার করেছিলেন।
২০০৫ সালে বুলা প্রথম মহিলা হিসেবে পাঁচটি মহাদেশের সমুদ্রপথ সাঁতার কেটে পার হয়েছিলেন। যার মধ্যে ছিল জিব্রাল্টার প্রণালী, টাইরেনিয়ান সাগর, কুক প্রণালী, গ্রিসের টোরোনিওস উপসাগর (কাসান্দ্রা উপসাগর), ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলে ক্যাটালিনা চ্যানেল এবং দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউনের কাছে থ্রি অ্যাঙ্কর বে থেকে রবেন দ্বীপ পর্যন্ত। তিনি ৩ ঘন্টা ২৬ মিনিটে ৩০ কিলোমিটার ট্র্যাক সাঁতার কেটেও রেকর্ড তৈরি করেছিলেন।