
বৃহস্পতিবার ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকলো গোটা দেশবাসী। যেখানে বিমানকর্মী সহ ২৪১ জন বিমান আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। প্রাণে বেঁচে গেছেন একজন যাত্রী। আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমানে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং ১ জন কানাডিয়ান যাত্রী ছিলেন।
দুপুর ১:৩৯ মিনিটে রানওয়ে ২৩ থেকে উড়ান শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ফ্লাইট AI-171 আহমেদাবাদের মেঘানীনগর আবাসিক এলাকায় ভেঙে পড়ে। বোয়িং ৭৮৭ মডেলের VT-ANB রেজিস্ট্রেশনধারী এই যাত্রীবাহী জেট বিমানে মোট ২৩০ জন যাত্রী ছিলেন। বিমানে ছিলেন ১০ জন ক্রু সদস্য এবং দু’জন পাইলটও। এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (ATC) সূত্রে জানা গেছে, উড়ান শুরুর পরপরই বিমানটি মে ডে (MAYDAY) (বিপদাবার্তা) সংকেত পাঠিয়েছিল। যদিও বারবার এটিসি'র পক্ষ থেকে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। এরপরই দুর্ঘটনার খবর মেলে।
তবে ভারতে বিমান দুর্ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও একাধিক ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার সাক্ষী থেকেছে দেশ।
২০২০ সালে কেরলের কালিকট বিমান বন্দরে এয়ার ইন্ডিয়ার এক্সপ্রেস ফ্লাইট ১৩৪৪ দুবাই থেকে কোঝিকোরে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে বেরিয়ে যায়। বিমান চার টুকরো হয়ে যায়। এই ঘটনায় ১৭২ জন আহত হয় এবং ২১ জনের মৃত্যু হয়।
২০১০ সালের ২২ মে এয়ার ইন্ডিয়ার এক্সপ্রেস ফ্লাইট ৮১২ দুবাই থেকে ব্যাঙ্গালোর বিমান বন্দরে অবতরণের সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। যেখানে মৃত্যু হয় ১৫৮ জন বিমানযাত্রীর। ৮ জন প্রাণে বেঁচে যান।
২০০০ সালের ১৭ জুলাই বিহারের পাটনায় ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ভেঙে পড়েছিল অ্যালাইন্স এয়ার-র বোয়িং ৭৩৭ যাত্রীবাহী বিমান। পাইলটের ভুলের কারণে সেবার ৬০ জনের বেশী যাত্রী প্রাণ হারিয়েছিলেন।
১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর মাঝ আকাশে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা ঘটে দিল্লির প্রায় ১০০ কিমি পশ্চিমে চরখি দাদরি শহরে। দিল্লি থেকে সৌদি আরবের বোয়িং ৭৪৭ বিমান - সৌদিয়া ফ্লাইট ৭৬৩ এবং কাজাখস্তানের চিমকেন্ট থেকে দিল্লিগামী ইলিউশিন ইল-৭৬ বিমান - কাজাখস্তান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ১৯০৭-র সংঘর্ষ হয়। যেখানে দুই বিমানের ৩৪৯ যাত্রীর মৃত্যু হয়।
১৯৯৩ সালের ২৬ এপ্রিল ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৪৯১ আওরঙ্গাবাদ থেকে উড়ানের পরই একটি বিদ্যুতের তারের সাথে ধাক্কা খায়, যার ফলে ৫৫ জন নিহত হন।
১৯৯১ সালের ১৬ আগস্ট ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ২৫৭ ইম্ফলের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে, যার ফলে বিমানে থাকা ৬৯ জন আরোহীরই মৃত্যু হয়।
১৯৯০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৬০৫, বেঙ্গালুরুতে পৌঁছানোর সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে ৯২ জন নিহত হন।
১৯৮৮ সালের ১৯ অক্টোবর ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ১১৩ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আহমেদাবাদ বিমান বন্দরে। জানা যায় পাইলটের গাফিলতির কারণে ১৩০ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়।
১৯৭৮ সালের ১ জানুয়ারি এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট ৮৫৫ মুম্বইয়ের বান্দ্রা উপকূলে ভেঙে পড়ে। বিমানে থাকা ২১৩ জন যাত্রীই প্রাণ হারান।
১৯৭৬ সালের ১২ অক্টোবর ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকে মুম্বই। ইঞ্জিনে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ইন্ডিয়ান এয়ার লাইন্সের ফ্লাইট ১৭১-র মধ্যেই আগুন লেগে যায়। মুম্বইতে ভেঙে পড়ে বিমানটি। ৯৫ জনের মৃত্যু হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন