
বৃহস্পতিবার দুপুরে গুজরাটের মেঘানিনগরে ভেঙে পড়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি যাত্রীবাহী বিমান। লন্ডনগামী ওই বিমানে বিমানকর্মী ও যাত্রী মিলিয়ে ছিলেন ২৪২ জন। সকলেরই মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। কয়েকটি সূত্র মারফত জানা গেছে এই বিমানেই ছিলেন গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা বিজয় রূপানি।
ইতিমধ্যেই বিজয় রূপানির বোর্ডিং পাসের ছবি সামনে এসেছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বিজয় রূপানি ছিলেন তালিকার ১২তম যাত্রী। তিনি জেড ক্লাসে বুকিং পেয়েছিলেন, যা বিজনেস ক্লাস বিভাগের আওতাধীন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গেছে, তিনি লন্ডন যাওয়ার উদ্দেশ্যে বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ মুহুর্তে তিনি বিমানে উঠেছিলেন কিনা, তা নিশ্চিত নয়।
বিজয় রূপানির রাজকোটের বাড়ির সামনে উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। উদ্বিগ্ন এবং অশ্রুসিক্ত প্রতিবেশীরা তাঁর বাড়ির বাইরে জড়ো হতে শুরু করেছেন। যদিও নিশ্চিতভাবে এখনও কিছু জানা যায়নি।
এক প্রতিবেশী সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, "আমি খবর পেয়েছি বিজয় রূপানিও বিমানে ছিলেন। কিন্তু এখনও নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি। আমরা অত্যন্ত চিন্তিত। আমরা পাশেই থাকি। আমরা ১৯৮৮ সাল থেকে প্রতিবেশী। আমরা পরিবারের মতো। আমার স্বামী তাদের পারিবারিক ডাক্তার এবং তাদের খুব কাছের মানুষ ছিলেন। আমি বিশ্বাস করতে পারছি না যে এরকম কিছু ঘটেছে।" কথা বলার সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন।
২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বিজয় রূপানি। রাজকোট পশ্চিমের বিধায়কও ছিলেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ১০ নাগাদ বিমানটি আমেদাবাদের টার্মিনাল ২ থেকে ছেড়েছিল। ৯ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের উড়ান শেষে আজ সন্ধ্যায় গ্যাটউইকে নামার কথা ছিল বিমানটির। লন্ডন থেকে দু’ঘণ্টার সড়ক দূরত্বে এই বিমানবন্দর অবস্থিত। কিন্তু ঊড়ানের কিছুক্ষণের মধ্যেই ভেঙে পড়ে বিমানটি। সেটি বেশি উচ্চতাতেও পৌঁছাতে পারেনি। যার ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জানা গেছে, যে জনবসতিপূর্ণ বহুতলগুলির উপর বিমানটি ভেঙে পড়েছে সেগুলিও ভস্মীভূত হয়ে গেছে। যদিও এখনও ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানা যায়নি।
দেশের অসামরিক বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ডিজিসিএ) জানিয়েছে, বোয়িং ড্রিমলাইনার এআই ১৭১ বিমানটিতে মোট ২৪২ জন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ২৩০ জন যাত্রী, ১০ জন ক্রু সদস্য এবং দু’জন পাইলট। যাত্রী তালিকা অনুসারে, বিমানে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ নাগরিক, সাতজন পর্তুগিজ নাগরিক এবং একজন কানাডিয়ান নাগরিক ছিলেন।
বিমানের দুই পাইলটের নাম ক্যাপ্টেন সুমিত সবরওয়াল, তিনি একজন লং টার্ম ক্যাপ্টেন (LTC) এবং তাঁর উড়ানের অভিজ্ঞতা ৮২০০ ঘণ্টা। সহ-পাইলট ছিলেন ক্লাইভ কুন্দর, যাঁর উড়ানের অভিজ্ঞতা ১১০০ ঘণ্টার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন