
নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের আরও একটি মামলায় জামিন পেলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। বুধবার আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালত নবম-দশম শ্রেণির নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে। তবে এখনই জেল থেকে মুক্তি মিলছে না। কারণ, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের মামলায় মূল অভিযুক্ত তিনি। সেই মামলায় জামিন হয়নি।
বুধবার নবম-দশম শ্রেণির নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত একাধিক নেতা ও এসএসসি-র প্রাক্তন আধিকারিক জামিনের আবেদন করেছিলেন। তবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই জামিনের বিরোধিতা করে। তাদের যুক্তি, প্রতিটি মামলার চরিত্র আলাদা, দুর্নীতির ধরনও ভিন্ন। পাশাপাশি, এই দুর্নীতি সমাজে বিরাট প্রভাব ফেলেছে বলে আদালতে সিবিআই দাবি জানায়। তবে শেষমেষ বিচারক পার্থের জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত ইডির মামলায় জামিন পেয়েছেন তিনি। এবার নবম-দশমে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় জামিন হল প্রাক্তন মন্ত্রীর। সাত হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পেয়েছেন তিনি। তবে প্রাথমিক নিয়োগ মামলাসহ একাধিক মামলা এখনও বিচারাধীন। ফলে জামিন হলেও এখনই জেলমুক্তি হচ্ছে না প্রাক্তন মন্ত্রীর।
২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়াতে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। ২০২২ সালের ২২ জুলাই ইডি প্রাক্তন মন্ত্রীর নাকতলার বাড়িতে হানা দিয়ে বিপুল পরিমাণ নথি ও প্রমাণ উদ্ধার করে। সেদিনই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের টালিগঞ্জ ও বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে মোট নগদ প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়। উদ্ধার হয় প্রচুর বিদেশি মুদ্রা এবং সোনার গয়নাও।
নিয়োগ দুর্নীতিতে বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে ওই বছরই ২৩ জুলাই পার্থ এবং অর্পিতাকে গ্রেফতার করে ইডি। ২৭ জুলাই অর্পিতার বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে আরও ২৭ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়। সঙ্গে উদ্ধার হয়েছিল বহুমূল্য গহনাও। ইডির দাবি, সবমিলিয়ে অর্পিতার দু’টি ফ্ল্যাট থেকে নগদে মোট ৪৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং ৫ কোটি ৮ লাখ টাকার গয়না উদ্ধার হয়েছিল। সঙ্গে নানা বৈদেশিক মুদ্রাও মিলেছিল। কমকরে ৬০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়।
শুধু ইডি নয়, পরে সিবিআই-য়েরও একাধিক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় নাম জড়ায় পার্থের। গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ— প্রায় সবক্ষেত্রেই অভিযুক্ত হিসেবে উঠে আসে তাঁর নাম। গত অক্টোবরে প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় তাঁকে ফের গ্রেফতার করে সিবিআই। সম্প্রতি আলিপুর আদালতে গ্রুপ সি মামলায় চতুর্থ চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন