SSC Scam: নিয়োগ দুর্নীতির অঙ্কটা ৩-৪ হাজার কোটি! অযোগ্যদের তালিকা নিয়েও প্রশ্ন বাগ কমিটির আইনজীবীর

People's Reporter: অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, শুধু কাগুজে অনিয়ম নয়, এর পেছনে বিপুল অঙ্কের লেনদেন হয়েছে। তাঁর অনুমান, নিয়োগ দুর্নীতির টাকার অঙ্ক কমপক্ষে তিন থেকে চার হাজার কোটি।
আইনজীবী অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায়
আইনজীবী অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ছবি - সংগৃহীত
Published on

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে উত্তাল রাজ্য। এই আবহে চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন কলকাতা হাইকোর্ট নিযুক্ত বাগ কমিটির আইনজীবী অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির অঙ্ক ৩ থেকে ৪ হাজার কোটি টাকার কম নয়। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) প্রকাশিত ১,৮০৬ জন দাগির তালিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, দুর্নীতি এত ব্যাপক হয়েছে যে প্রকৃত সংখ্যা এর বহু গুণ বেশি।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে গত সপ্তাহে এসএসসি ১,৮০৬ জন অযোগ্যের তালিকা প্রকাশ করে। কিন্তু বাগ কমিটির আইনজীবী অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি কলকাতার এক সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় দাবি করেন, বাস্তবে সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি। তাঁর দাবি, আদালতে নানা সময়ে ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা সামনে এসেছে। কখনও পাঁচ হাজার, কখনও সাত হাজার, আবার কখনও নয় হাজার। সুপ্রিম কোর্টেও প্রায় সাড়ে ছ’হাজার নাম ‘অযোগ্য’ হিসাবে জমা পড়েছে। সেই প্রেক্ষিতে ১,৮০০ বা ১,৯০০ জনের তালিকা 'অসঙ্গত' বলেই মন্তব্য করেন তিনি।

তদন্তে উঠে এসেছে দুর্নীতির একাধিক চিত্র। উদাহরণস্বরূপ মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেল থেকে নিয়োগ, অযোগ্য প্রার্থীদের র‍্যাঙ্ক হঠাৎ বাড়ানো, সার্ভারে আপলোড করা স্ক্যানড সই ব্যবহার করে জারি হয়েছে ভুয়ো নিয়োগপত্র। এমনকি জেলা স্কুল পরিদর্শকের মাধ্যমে কৃত্রিম শূন্যপদ তৈরি করে নিয়োগ করা হয়েছে।

এবিষয়ে সাক্ষাৎকারে অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেউ পরীক্ষা দিয়ে ফেল করে অফিসে এসে কান্নাকাটি করেছে, অফিস থেকে তাঁকে বলা হয়েছে RTI করো। দু’মাসের মধ্যে চাকরি হয়ে গেছে তাঁর, আবার নম্বরও বেড়ে গেছে। এ সবই সম্ভব হয়েছে স্ক্যানড সিগনেচারের খেলায়। আপনি যদি তাঁদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারগুলো আনান...আপনি দেখবেন সমস্ত স্ক্যানড সিগনেচারই আছে। কোনও ফ্রেশ সিগনেচার বা অরিজিনিল সিগনেচার তাতে কিছু নেই।”

হাইকোর্ট নিযুক্ত বাগ কমিটির প্রায় দেড় হাজার পাতার রিপোর্টে একাধিক অনিয়মের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। সেখানে দেখা যায় - প্যানেল এক্সপায়ারি হয়ে যাওয়ার পরও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নতুন প্যানেল আপলোডের আগেই পুরোনো তালিকায় র‍্যাঙ্ক পরিবর্তন করা হয়েছে। ভুয়ো নিয়োগপত্র এসএসসির প্রধান কার্যালয় থেকে নয়, বরং নবনির্মিত ভবন থেকে বিলি হয়েছে।

এই দুর্নীতিতে সরাসরি জড়িয়ে ছিলেন এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্‌হা ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অনুমতিতেই পাঁচ সদস্যের একটি বেআইনি কমিটি গঠন হয় বলে দাবি রিপোর্টে। তবে এই কমিটির সঙ্গে রাজ্য সরকারের সরাসরি যোগাযোগ ছিল কি না, সেই প্রশ্নে বাগ কমিটি সুনিশ্চিত হতে পারেনি।

অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, শুধু কাগুজে অনিয়ম নয়, এর পেছনে বিপুল অঙ্কের লেনদেন হয়েছে। তাঁর অনুমান, নিয়োগ দুর্নীতির টাকার অঙ্ক কমপক্ষে তিন থেকে চার হাজার কোটি।

আইনজীবী অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায়
WB Education: রাজ্যের ২২১৫ প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকহীন বা ১ জন শিক্ষক, 'পরিকল্পিত অবহেলা' - ABPTA
আইনজীবী অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায়
SSC Scam: 'এতদিন কোথায় ছিলেন?' - পরীক্ষায় বসতে চেয়ে 'অযোগ্য'দের মামলা খারিজ হাইকোর্টে

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in