
তৃণমূলের বিরুদ্ধে ফের সরব হলেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হওয়ার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের পুরনো দলের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ পশ্চিমবঙ্গের ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগের পুরো প্যানেলই বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে। বেঞ্চ জানিয়েছে, ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগের পুরো প্রক্রিয়াতেই কারচুপি করা হয়েছে। ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। যা নিয়ে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন চাকরিহারাদের একাংশ।
নিজের এক্স মাধ্যমে জহর সরকার লেখেন, "মানুষ আমাকে জিজ্ঞাসা করে কেন আমি তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। আমার বিবেক কি আমাকে এই ধরণের পচনের অংশ হতে দেবে? আমি তৃণমূল কংগ্রেসের সাথে গিয়েছিলাম কারণ দলটিকে সাম্প্রদায়িক, ফ্যাসিবাদী বিজেপির বিরুদ্ধে সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ ভেবেছিলাম। আমি তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়েছি কারণ তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতি এবং কর্তৃত্ববাদ চরমে পৌঁছেছে"।
২০২১ সালে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন প্রসার ভারতীর প্রাক্তন সিইও জহর সরকার। তখনই তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠানো হয় দলের তরফে। কিন্তু ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে দল এবং সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। এরপর একাধিকবার তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তিনি। এদিন ফের একবার সরব হলেন তিনি।
অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রসঙ্গে এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আত্মরক্ষার জন্যেও তো সুযোগ দেওয়া উচিত। এতগুলো শিক্ষকের ভবিষ্যৎ! ভুলে যাবেন না, এরা সবাই স্কুলের শিক্ষক।"
তিনি আরও বলেন, "যাঁদের বাতিল করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ১১৬১০ জন নবম-দশম শ্রেণিতে পড়াতেন। ৫৫৯৬ জন একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াতেন। বাকিরা অন্য ক্লাসে। আপনারা জানেন, নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এটি উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার ‘গেটওয়ে’। তাঁদের মধ্যে অনেকে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকের খাতা দেখছেন। যদি তর্কের খাতিরে ধরে নেওয়া হয়, ২৬ হাজারের চাকরি বাদ দিয়ে দেওয়া হয়, তা হলে স্কুলে পড়াবে কে!”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন