
ফের বিতর্কিত মন্তব্য করে খবরের শিরোনামে এলেন মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা নীতেশ রানে। ইভিএম নিয়ে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক মন্তব্য রাখার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। যার নিন্দা কেবল বিরোধীরাই নন, এনডিএ জোট শরিক নেতাও করেছেন।
শুক্রবার মহারাষ্ট্রের সাঙ্গলীতে এক ধর্মীয় সভাতে যান নীতেশ রানে। সেখানেই সংখ্যালঘুদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। তিনি জানান, "বিরোধীরা বার বার ইভিএম নিয়ে সরব হয়েছে। হিন্দুরা যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে হিন্দুদের ভোট দিচ্ছেন এটাই তাঁরা মেনে নিতে পারছেন না। হেরে গিয়েই শুধু ইভিএমকে দোষারোপ করেন। তাঁরা আসলে ইভিএম-র মানেই জানে না। ইভিএম মানে 'এভরি ভোট এগেন্সট মোল্লা'। আমরা গর্ব করে বলছি যে ইভিএম আছে বলেই আমরা জিততে পারছি"।
রাজ্যের মন্ত্রীর এমন মন্তব্যের পর সরব হয়েছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর বলেন, 'অবাক করার মতো কথা। স্বাধীনতা সংগ্রামের সাধারণ মুল্যবোধটা আমাদের দেশের সকল মানুষকে বুঝতে হবে। একদল ধর্মের কারণ দেখিয়ে পাকিস্তান তৈরি করেছিল। গান্ধীজি বলেছিলেন, আমরা সকলের জন্য স্বাধীনতার লড়াই করেছি। সবাই মিলেই দেশ গড়বো। সকলের সমান অধিকার থাকবে। সেখানে দাঁড়িয়ে যদি কেউ হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান অথবা অন্য যেকোনও একটি ধর্মের কথা বলে তাহলে তা ভুল। আমরা সবাই ভারতবাসী'।
এনডিএ জোট শরিক রিপাবলিকান পার্টি অফ ইন্ডিয়ার নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামদাস অঠওয়ালে বলেন, "নীতেশ রানে মহারাষ্ট্রের একজন মন্ত্রী। তিনি ভুল বক্তব্য রেখেছেন। এমন কথা বলা উচিত নয়। দেশ সংবিধান অনুসারে চলে। নীতেশ রানের এত কঠোর অবস্থান নেওয়া উচিত নয়। মুসলমানরাও আমাদের দেশবাসী। তাঁরা আমাদের নিজের লোক। তাঁদের উপর সবসময় আক্রমণ করা উচিত নয়।"
প্রসঙ্গত, এর আগেও একাধিকবার বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নারায়ণ রাণের ছেলে নীতিশ রানে। সম্প্রতি ওয়াইনাড লোকসভা উপনির্বাচনে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর জয়ের পর কেরালাকে 'মিনি পাকিস্তান' বলে কটাক্ষ করেছিলেন তিনি। নীতেশ রানে বলেছিলেন, কেরালা এখন মিনি পাকিস্তান। তাই রাহুল গান্ধী এবং তাঁর বোন সেখান থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। সমস্ত সন্ত্রাসবাদীরা ওদের পক্ষে ভোট দিয়েছে। এটাই সত্যি। আপনারা জিজ্ঞেস করতে পারেন। তাঁরা সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে নিয়ে ভোটে জিতেছেন।
তাঁর এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করছিল কংগ্রেস। পাশাপাশি কেরলের মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিআইএম নেতা পিনারাই বিজয়নও এই মন্তব্যকে ‘গভীরভাবে বিদ্বেষপূর্ণ’ এবং ‘চরম নিন্দনীয়’ বলে জানিয়েছিলেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন