
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে ভারত সরকারের নেওয়া প্রতিটি সিদ্ধান্তকে পূর্ণ সমর্থন করবে দেশের বিরোধী দলগুলি। সর্বদল বৈঠকে বিরোধীদের পক্ষে এমনটাই জানানো হয়েছে। পাশাপাশি এও জানা যাচ্ছে, নিরাপত্তার গাফিলতির অভিযোগ মেনে নিয়েছে সরকার। সংবাদ মাধ্যম 'ইন্ডিয়া টুডে' থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই দাবি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং-র নেতৃত্বে দিল্লিতে সর্বদল বৈঠক হয়। প্রথম থেকেই এই ঘটনায় নিরাপত্তার গাফিলতির অভিযোগ করেছিলেন বিরোধীরা। ঘটনাস্থলে কোনও সেনাবাহিনীর উপস্থিতি ছিল না বলে জানান আক্রান্ত পর্যটকরাও। কয়েক ঘণ্টা পর সেনা এসেছে। সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। এবার নিরাপত্তার ঘাটতির কথা মানলো কেন্দ্র।
বৈঠকে বিরোধী দলগুলোর একাধিক নেতা সরাসরি প্রশ্ন তোলেন নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতা নিয়ে। সূত্রের দাবি বিরোধীরা প্রশ্ন তোলেন, “নিরাপত্তা বাহিনী কোথায় ছিল? কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনী কোথায় ছিল?”
সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হওয়া বৈঠক শেষ হয় রাত ৮টা নাগাদ। সূত্রের খবর, বৈঠকে সরকার পক্ষের এক সিনিয়র নেতা বলেন, “যদি কিছু ভুল না হত, তাহলে আমরা এখানে কেন বসে থাকতাম? কোথাও না কোথাও এমন ত্রুটি হয়েছে যা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।”
তবে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অনন্তনাগ জেলার পহেলগামের বৈসরন এলাকাটি পুনরায় পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়ার আগে স্থানীয় প্রশাসন নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে এই বিষয়ে কিছু জানায়নি।
বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু সাংবাদিকদের বলেন, “সব দল একমত যে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকা জরুরি। সমস্ত রাজনৈতিক দল জানিয়েছে, সরকার যে কোনও পদক্ষেপ নিলে তারা পাশে থাকবে।”
অন্যদিকে, লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী বলেন, “পহেলগাঁও সন্ত্রাসবাদী হামলার বিরুদ্ধে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে নিন্দা জানিয়েছে। বিরোধী দল সরকারকে যে কোনও পদক্ষেপে পূর্ণ সমর্থন দেবে।”
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেন, “আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব জম্মু ও কাশ্মীর শান্তি ফিরুক।”
প্রসঙ্গত, সর্বদলীয় বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন এবং সংসদীয় বিষয়কমন্ত্রী কিরেন রিজিজু সহ শীর্ষ মন্ত্রীরা। প্রধানমন্ত্রী মোদী উপস্থিত ছিলেন না বৈঠকে।
পাশাপাশি রাজ্যসভার শাসক পক্ষের দলনেতা তথা বিজেপি সাংসদ জেপি নাড্ডা, বিরোধী দলনেতা তথা মল্লিকার্জুন খাড়গে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী, সুপ্রিয়া সুলে (এনসিপি-এসপি), বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য (সিপিআইএম), প্রফুল্ল প্যাটেল (এনসিপি), সস্মিত পাত্র (বিজেডি), লাভু শ্রী কৃষ্ণ দেবরায়ালু (টিডিপি), শ্রীকান্ত শিন্ডে (শিবসেনা), সঞ্জয় সিং (আপ), সুদীপ বন্দোপাধ্যায় (তৃণমূল), প্রেমচাঁদ গুপ্ত (আরজেডি), টি শিবা (ডিএমকে), এবং রাম গোপাল যাদব (এসপি) ছাড়াও আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন