
আচমকাই স্টাফ সিলেকশন কমিশন (এসএসসি) পরীক্ষা বাতিল। যা নিয়ে দিল্লির রামলীলা ময়দান বিক্ষোভে নেমেছেন পরীক্ষার্থীরা। রবিবার বিক্ষোভ চলাকালীন বহু পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ বলে অভিযোগ। এমনকি পুলিশের বিরুদ্ধে 'লাঠিচার্জ' করার অভিযোগও উঠেছে। ঘটনার পর রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা থেকে অরবিন্দ কেজরিওয়াল - দিল্লি পুলিশ এবং কেন্দ্র সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন। যদিও দিল্লি পুলিশ লাঠিচার্জের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
রবিবার দিল্লির রামলীলা ময়দানে এসএসসি পরীক্ষা যথাযথ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করার দাবিতে বিক্ষোভ দেখান পরীক্ষার্থীরা। সেখানে পরীক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ করে দিল্লি পুলিশ। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে রাহুল গান্ধী নিজের এক্স হ্যান্ডেলে এক পোস্টে এই ঘটনাকে সরকারের 'কাপুরুষতার' পরিচয় বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি লেখেন, “প্রথমে তারা তোমাদের ভোট চুরি করবে, এরপর পরীক্ষা, তারপর চাকরি, শেষে অধিকার ও কণ্ঠস্বরও কেড়ে নেবে। যুবসমাজ, কৃষক, দরিদ্র, বহুজন ও সংখ্যালঘু—কাউকেই এরা অগ্রাধিকার দেয় না। এখন সময় এসেছে ভয় নয়, বরং সাহস নিয়ে লড়াই করার।”
অন্যদিকে, এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, "প্রতিটি পরীক্ষায় জালিয়াতি, নিয়োগে কেলেঙ্কারি এবং প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় সমগ্র দেশের যুবসমাজ উদ্বিগ্ন। বিজেপি শাসনাকালে নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং পরীক্ষায় দুর্নীতি যুবসমাজের ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে। তরুণদের কথা শোনার পরিবর্তে, তাদের উপর লাঠিচার্জ করা দুর্ভাগ্যজনক। সুষ্ঠু এসএসসি নিয়োগের দাবিতে আজ মোদী সরকার শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ করেছে। যারা বেকারত্ব দূর করতে পারেনি তারা এখন তরুণদের কণ্ঠস্বর দমন করতে ব্যস্ত"।
অন্যদিকে, এই ঘটনার পর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন আম আদমি পার্টির জাতীয় আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এক্সে তিনি লেখেন, "দেশে প্রকাশ্য গুন্ডামি চলছে। যারা বিজেপির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলে তাদের লাঠিচার্জ করে চুপ করে দেওয়া হয়। এসএসসি পরীক্ষার অনিয়মের জন্য এই শিক্ষার্থীরা কয়েক মাস ধরে ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করছে। তাদের কণ্ঠস্বর শোনার পরিবর্তে, রাতের অন্ধকারে তাদের লাঠি দিয়ে পেটানো হয়েছে"।
যদিও লাঠিচার্জের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। আধিকারিকদের দাবি, প্রায় ১,৫০০ বিক্ষোভকারী রামলীলা ময়দানে জড়ো হয়েছিলেন। বহুবার অনুরোধ সত্ত্বেও ১০০ জন অনুমোদিত সময়ের পরেও স্থান ত্যাগ করতে অস্বীকার করেন। যার ফলে ৪৪ জনকে আটক করা হয়। যদিও পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত ২৪ জুলাই থেকে ১ আগস্টের মধ্যে ১৪২টি শহরের ১৯৪টি কেন্দ্রে আচমকাই বন্ধ হয়ে যায় পরীক্ষা। এর কারণ হিসেবে সফ্টওয়্যার ক্র্যাশ, বায়োমেট্রিক যাচাইকরণ ব্যর্থতা এবং ভুল কেন্দ্র বরাদ্দ উঠে আসে। পরীক্ষার জন্য পাঁচ লক্ষ পরীক্ষার্থী পৌঁছে গিয়েছিল কেন্দ্র। তারপর ঘটে এই ঘটনা। যা নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিক্ষোভ। যারই প্রতিবাদে রবিবার দিল্লির রামলীলা ময়দানে বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল পরীক্ষার্থীদের।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন