
* তথ্য পরিসংখ্যান সহ নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর।
* রাহুল গান্ধীর দাবি - গত ১০-১৫ বছর ধরে ভারতের নির্বাচনে ভোট চুরি হচ্ছে।
* উদাহরণ হিসেবে তিনি কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা এবং মধ্যপ্রদেশের কথা বলেন।
দেশের সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলিতে কারচুপির পরিসংখ্যান তুলে ধরে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। গত ২৪ জুলাই এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এই তথ্য তুলে ধরবেন বলে আগাম জানিয়েছিলেন। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে রাহুল গান্ধী জানান, গত ১০-১৫ বছর ধরে নির্বাচনে ভোট চুরি হয়ে আসছে। যার সুবিধা পেয়েছে বিজেপি। সাম্প্রতিক সময়ে বারবার নির্বাচন কমিশনের দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেও এর আগে এত স্পষ্ট ভাষায় রাহুল কমিশনকে আক্রমণের রাস্তায় হাঁটেননি।
বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে তথ্য ও পরিসংখ্যান সহ 'ভোট চুরির' একাধিক উদাহরণ তুলে ধরেন রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা এবং মধ্যপ্রদেশে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ভোটে যে ফলাফল এসেছে, তা ‘ইন্ডিয়া’ জোটের আশঙ্কাকেই সত্যি প্রমাণ করছে।
তিনি জানান, নির্বাচন কমিশনের কাছে বার বার চাওয়া সত্ত্বেও ইচ্ছাকৃতভাবে ইলেকট্রনিক ডেটা সরবরাহ করছে না, যাতে করে বিস্তারিত বিশ্লেষণ সম্ভব না হয়। ফলে স্ক্যান করলেও ডেটা বের করা যায় না।”
রাহুল আরও অভিযোগ করেন, মহারাষ্ট্রে এক কোটিরও বেশি নতুন ভোটার হঠাৎ করে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের মাঝখানে। এই ইস্যুতে তারা নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হলেও, কোনো উত্তর মেলেনি বলে জানান তিনি।
কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেখানে তাঁর মতে, এক লক্ষেরও বেশি ভোট চুরি হয়েছে। তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের তথ্য বিশ্লেষণ করে কংগ্রেস নিশ্চিত হয়েছে যে এক লাখেরও বেশি ভোটারের নাম একাধিক জায়গায় আছে। এছাড়াও ভুল ঠিকানা এবং গণহারে ভোটারের নাম তোলা হয়েছে মহাদেবপুরায়। এটা শুধু একটি রাজ্যের ঘটনা নয়। আমরা নিশ্চিত, গোটা দেশজুড়ে এই রকম অপরাধ চলছে।”
এদিন রাহুল গান্ধী বলেন, ভোটার তালিকা এবং সিসিটিভি ফুটেজ এখন এই অপরাধের প্রমাণ, আর নির্বাচন কমিশন সেই প্রমাণ ধ্বংসের চেষ্টা করছে। এটা ভারতের সংবিধান ও জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে অপরাধ।
পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকে হুঁশিয়ারিও দেন কংগ্রেস সাংসদ। তিনি জানান, "একদিন তো বিরোধীরা ক্ষমতায় আসবে। সেদিন আপনাদের ছাড়বো না। কারণ আপনারা দেশের একটি প্রতিষ্ঠানকে আক্রমণ করছেন। যে সব নির্বাচনী আধিকারিক এই কাজের সাথে যুক্ত আছেন, তা সে আপনি শীর্ষ পদেই থাকুন বা নীচু স্তরে, আমাদের তাতে কিছু যায় আসে না। কারণ আপনারা প্রতারণা করছেন ভারতের জনগণের সাথে"।
গত ২৪ জুলাই এক সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাহুল গান্ধী জানিয়েছিলেন, আমরা যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আপনাদের আমরা প্রমাণ দেখাবো তখন ১০০ শতাংশ প্রমাণই দেখাবো, ৯০ শতাংশ নয়। আমরা কর্ণাটকের একটি কেন্দ্রের তথ্য সংগ্রহ করেছি এবং এই প্রমাণ পেয়েছি। আমি নিশ্চিত যে কেন্দ্রের পর কেন্দ্রে এই একই নাটক করা হয়েছে। হাজারে হাজারে নতুন ভোটার যুক্ত করা হয়েছে, কিন্তু তাঁদের বয়স কত? তাঁদের বয়স ৪৫, ৫০, ৬০ অথবা ৬৫। একই কেন্দ্রে এরকম হাজার হাজার ভোটারের নাম যুক্ত হয়েছে।
Keywords: Rahul Gandhi, vote rigging, Election Commission, Indian elections, voting fraud, political controversy
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন