
দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও নির্ভুল করতে ভারতের নির্বাচন কমিশন (ECI) আগামী মাস থেকে বিহারের মতোই দেশব্যাপী ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (Special Intensive Revision - SIR) শুরু করতে চলেছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্য নির্বাচন কমিশনগুলিকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট SIR-কে “সাংবিধানিক ভাবে বৈধ” হিসেবে উল্লেখ করার পরই তৎপর হয়ে উঠেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। বিহারেও এই সংশোধন মেনেই নির্বাচন প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয় শীর্ষ আদালত।
নির্বাচন কমিশনের এই নির্দেশের বিরোধিতা করে দেশের বিরোধী দলগুলির একাংশ এবং কিছু নাগরিক সংগঠন এই বিশেষ সংশোধন প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানায়। তাদের অভিযোগ, এতে অনেক যোগ্য নাগরিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। তবে আদালতে মান্যতা পেয়ে যাবার পর এবার ECI এই উদ্যোগকে সারাদেশে প্রসারিত করতে উদ্যোগী হয়েছে।
অন্যদিকে, বেশ কিছু রাজ্যের প্রধান নির্বাচনী আধিকারিক (CEO) ইতিমধ্যেই পূর্ববর্তী SIR-এর পর আপডেট হওয়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। যেমন, দিল্লিতে সর্বশেষ SIR হয় ২০০৮ সালে এবং সেই সময়কার তালিকা এখনও CEO-এর ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে। উত্তরাখণ্ডে ভোটার তালিকায় শেষ সংশোধন হয়েছিল ২০০৬ সালে।
ECI জানিয়েছে, প্রতিটি রাজ্যের শেষ SIR সংশ্লিষ্ট ভোটার তালিকার কাট-অফ পয়েন্ট হিসেবে বিবেচিত হবে। বিহারে বর্তমানে ২০০৩ সালের তালিকা পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। অধিকাংশ রাজ্যেই এই কাট অফ ২০০২ থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে রাখা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ২৮ জুলাইয়ের পরে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কারণ ওই দিন সুপ্রিম কোর্টে বিহার SIR সংক্রান্ত মামলার পরবর্তী শুনানি।
কমিশনের সূত্র অনুসারে, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে এই সার্বিক পর্যালোচনার মাধ্যমে অবৈধ বিদেশী অভিবাসীদের শনাক্ত ও তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। বিশেষত যারা বাংলাদেশ, নেপাল ও মায়ানমার থেকে এসে ভোটার তালিকায় ঢুকে পড়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও সূত্রের ভিত্তিতে আসা এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন বিহারের বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব।
উল্লেখ্য, চলতি বছর বিহার এবং ২০২৬ সালে আসাম, কেরালা, পুদুচেরি, তামিলনাড়ু এবং পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার আগেই ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধন করার এই উদ্যোগকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন