মহারাষ্ট্র সরকারের সদ্য পাস করা ‘মহারাষ্ট্র স্পেশাল পাবলিক সিকিউরিটি বিল, ২০২৪’-কে (Maharashtra Special Public Security Bill) ‘বিজেপি সুরক্ষা আইন’ বলে কটাক্ষ করলেন শিবসেনা (উদ্ধব শিবির) প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। এই বিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রণীত বলে কটাক্ষ করলেন তিনি। পাশাপাশি বিলটি বিরোধী দল ও সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধেও ব্যবহার করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন তিনি।
শুক্রবার রাজ্য বিধানসভায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে উদ্ধব ঠাকরে বলেন, "এই সরকার মনে করে, যারা সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলবে, তারা সবাই দেশবিরোধী। এই বিলের মধ্য দিয়ে সরকারের দমনমূলক মানসিকতা স্পষ্ট হয়েছে।"
মহারাষ্ট্রের বিধানসভা ও বিধান পরিষদ - দুই কক্ষেই এই বিলটি সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে পাস হয়েছে। বিলের আওতায় উগ্র-বামপন্থী সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ, সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া এই ধরনের অপরাধকে অ-জামিনযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
তবে ঠাকরের অভিযোগ, এই বিলের খসড়ায় ‘নকশালবাদ’ বা ‘সন্ত্রাসবাদ’-এর কোনও উল্লেখ নেই। বরং এতে অস্পষ্ট ভাষায় ‘অবৈধ কার্যকলাপ’-এর উল্লেখ করা হয়েছে, যা যেকোনও সমালোচনাকে দমন করার হাতিয়ার হতে পারে।
তিনি বলেন, “সংবিধান সমতা, সামাজিক ন্যায় এবং অন্তর্ভুক্তির কথা বলে। কিন্তু এই বিল সেই নীতির পরিপন্থী। এর মাধ্যমে রাজনৈতিক বিরোধিতাকে অপরাধে পরিণত করার চেষ্টা চলছে।”
বিলের অস্বচ্ছ সংজ্ঞা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ঠাকরে বলেন, "এই ধরনের আইন আগে MISA ও TADA-র মতো আইনের মাধ্যমে এসেছে। আমরা আশঙ্কা করছি, আবার সেই দমননীতির পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে।" উল্লেখ্য, উদ্ধব ঠাকরে রাজ্য পরিষদের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, তবু বিল আলোচনায় তিনি অংশগ্রহণ করেননি।
এই বিলের তীব্র সমালোচনা করে সিপিআইএম পলিট ব্যুরো সদস্য অশোক ধাওয়ালে এক ভিডিও বার্তায় বলেন, "এই আইনের একমাত্র উদ্দেশ্য স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা, সরকারের বিরুদ্ধে প্রশ্ন করার অধিকার কেড়ে নেওয়া। এই ধরণের আইন পাশ করে বিজেপি সরকার দেশে যেটুকু গণতান্ত্রিক পরিসর অবশিষ্ট রয়েছে, তাও ধ্বংস করতে চাইছে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন