
ভারতের অর্থনৈতিক কাঠামো ও সম্পদের বৈষম্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রী নীতিন গডকড়ি (Nitin Gadkari)। তাঁর মতে দেশের সম্পদ কেবল ধনীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে। এর বিকেন্দ্রীকরণ না হলে দেশের উন্নতি সম্ভব নয়।
শনিবার নাগপুরে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে গডকড়ি বলেন, “ধীরে ধীরে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়ছে এবং দেশের যাবতীয় সম্পদ কিছু ধনী ব্যক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত হচ্ছে। এটা হওয়া উচিত নয়।”
মন্ত্রীর কথায়, অর্থনীতিকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে তা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে এবং গ্রামীণ অঞ্চলের উন্নয়নে সহায়ক হয়। তিনি বলেন, “আমরা এমন একটি অর্থনৈতিক বিকল্পের দিকে তাকিয়ে আছি যা কর্মসংস্থান তৈরি করবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে গতি দেবে। সম্পদের বিকেন্দ্রীকরণ আজকের সময়ে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।”
গডকড়ি আরও বলেন, “জিডিপি-তে উৎপাদন খাতের অবদান ২২-২৪ শতাংশ, পরিষেবা খাতের ৫২-৫৪ শতাংশ। অন্যদিকে দেশের ৬৫-৭০ শতাংশ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল হলেও তা মাত্র ১২ শতাংশ অবদান রাখে।”
দুই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পি ভি নরসিমা রাও এবং ডক্টর মনমোহন সিং-এর আর্থিক সংস্কারের প্রশংসা করলেও তিনি সতর্ক করে বলেন, "অনিয়ন্ত্রিত সম্পদ কেন্দ্রীকরণ আমাদের জন্য চিন্তার বিষয়।"
স্বামী বিবেকানন্দের উদ্ধৃতি উল্লেখ করে গডকড়ি বলেন, “যাঁর পেট খালি, তাঁকে দর্শন শেখানো যায় না”। দেশীয় তহবিল সংগ্রহের কথাও তিনি তুলে ধরেন নিজের বক্তৃতায়। বলেন, “বিদেশি অর্থের ওপর নির্ভর না করে আমরা দেশের দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ট্রাস্ট (InvIT) বন্ডের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করছি। যারা ১০০ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন, আজ তা ১৬০ টাকায় পৌঁছেছে এবং তাঁরা ১৮-২০ শতাংশ রিটার্ন পাচ্ছেন।”
গডকড়ির এই মন্তব্য দেশের অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং দারিদ্র্যের বাস্তব চিত্র নিয়ে রাজনৈতিক এবং সামাজিক স্তরে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিতে পারে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন