
দেশের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আরও কড়া আক্রমণের পথে হাঁটলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। বুধবারের পর বৃহস্পতিবারও রাহুল গান্ধীর নিশানায় নির্বাচন কমিশন। এদিন কংগ্রেস সাংসদ বলেন, কংগ্রেসের কাছে ‘১০০ শতাংশ নিশ্চিত প্রমাণ আছে’ যে নির্বাচন কমিশন কর্ণাটকের এক লোকসভা কেন্দ্রে জালিয়াতিকে প্রশ্রয় দিয়েছে। পাশাপাশি এদিন রাহুল বলেন, এর থেকে রেহাই পাবে না নির্বাচন কমিশন, আমরা সমস্ত প্রমাণ নিয়ে আসছি।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাহুল গান্ধী জানান, আমরা যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আপনাদের আমরা প্রমাণ দেখাবো তখন ১০০ শতাংশ প্রমাণই দেখাবো, ৯০ শতাংশ নয়। আমরা কর্ণাটকের একটি কেন্দ্রের তথ্য সংগ্রহ করেছি এবং এই প্রমাণ পেয়েছি। আমি নিশ্চিত যে কেন্দ্রের পর কেন্দ্রে এই একই নাটক করা হয়েছে। হাজারে হাজারে নতুন ভোটার যুক্ত করা হয়েছে, কিন্তু তাঁদের বয়স কত? তাঁদের বয়স ৪৫, ৫০, ৬০ অথবা ৬৫। একই কেন্দ্রে এরকম হাজার হাজার ভোটারের নাম যুক্ত হয়েছে।
এদিন সংসদ ভবনের বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাহুল গান্ধী বলেন, আমি নির্বাচন কমিশনকে জানাতে চাই যে, তোমরা এটা থেকে পালাতে পারবে, যদি তোমাদের আধিকারিকরা মনে করে থাকেন এর থেকে নজর ঘুরিয়ে দিতে পারবেন, তাহলে ভুল করছেন। কারণ আপনারা এটা থেকে পালাতে পারবেন না। আমরা আপনাদের কাছে প্রমাণ নিয়ে আসছি।
বুধবার সংসদ ভবনের বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাহুল গান্ধী জানিয়েছিলেন, ‘কর্ণাটকেও লোকসভা নির্বাচনে ভোট চুরি করা হয়েছে। কংগ্রেস এই চক্রান্ত ধরতে পেরেছে। যার জন্য বিহারে কমিশন সেই পদ্ধতি বদলাতে বাধ্য হয়েছে। রাহুল আরও বলেন, বিহারের এসসি, এসটি, ওবিসি এবং সংখ্যালঘু ভাইবোনদের এসআইআর-এর নাম করে ভোট চুরি করা হচ্ছে। আমরা বসে থাকবো না। মানুষের অধিকারের দাবিতে আমরা সংসদ থেকে রাস্তায় সরব থাকবো। গতকাল এক এক্স বার্তায় তিনি বলেন, ‘ভারতে ভোট চুরি করা হচ্ছে, এটা সত্যি।’
গতকালের মত আজ বৃহস্পতিবার ২৪ জুলাই, ২০২৫-এও সংসদে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (Special Intensive Revision (SIR) of Electoral Rolls) নিয়ে আলোচনার দাবিতে অনড় ছিলেন বিরোধীরা। এদিনও লোকসভা এবং রাজ্যসভায় কোনও কাজ চালিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। বিরোধীরা সংসদের দুই কক্ষেই তাদের বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে। বিরোধী সাংসদরা বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রত্যাহারের দাবি জানান এবং “SIR ফিরিয়ে নিন” শ্লোগান তোলেন। বিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত থাকায় লোকসভার অধিবেশন শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই দিনের মত মুলতবি করে দেওয়া হয়।
সংসদের দুই কক্ষে অধিবেশনের প্রথম তিন দিনের মতোই এদিনও লাগাতার বিক্ষোভ দেখায় বিরোধীরা। মূলত বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR), পহেলগাঁওতে সন্ত্রাসবাদী হামলা এবং অপারেশন সিন্দুর নিয়ে আলোচনার দাবিতে সরব হন বিরোধীরা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন