
পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি ঘোষণার একদিন পরই, লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সংসদে বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি জানিয়েছেন। তাঁর মতে, পহেলগাম সন্ত্রাসবাদী হামলা, অপারেশন সিঁদুর এবং মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত সংঘর্ষ বিরতির বিষয়ে আলোচনার জন্য সংসদে আলোচনা প্রয়োজন।
বিশেষ অধিবেশন ডাকার আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন রাহুল গান্ধী। চিঠিতে রাহুল গান্ধী লেখেন, “আমি অবিলম্বে সংসদের একটি বিশেষ অধিবেশন ডাকার জন্য বিরোধীদের সর্বসম্মত অনুরোধ পুনর্ব্যক্ত করছি। জনগণ এবং তাদের প্রতিনিধিদের জন্য পহেলগাঁও সন্ত্রাসবাদী হামলা, অপারেশন সিঁদুর এবং মার্কিন রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প কর্তৃক ঘোষিত সংঘর্ষবিরতি নিয়ে আলোচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের সম্মিলিত সংকল্প প্রদর্শনের একটি সুযোগও হবে। আমি বিশ্বাস করি যে আপনি এই দাবিটি গুরুত্ব সহকারে এবং দ্রুত বিবেচনা করবেন।"
রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেও একই দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন। তিনি জানান, 'গত ২৮ এপ্রিলের চিঠিতেও দুই কক্ষে বিশেষ অধিবেশন ডাকার আহ্বান জানানো হয়েছিল।' এবারও তিনি লোকসভার বিরোধী নেতার অনুরোধকে সমর্থন জানিয়ে পুনরায় দাবি জানিয়েছেন।
এর আগে, পহেলগাঁও হামলার পর সরকার সর্বদলীয় বৈঠক ডাকলেও, প্রধানমন্ত্রী সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। তবে বিরোধীরা সন্ত্রাসবাদী হামলার বিরুদ্ধে সরকারের যেকোনো কঠোর পদক্ষেপে পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছিল।
গত শনিবার ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষ বিরতি নিয়ে ট্যুইট করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানান, “দীর্ঘ আলোচনার পর ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। উভয় দেশকে অভিনন্দন।”পরবর্তী ঘোষণাটি আসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর তরফ থেকে, তিনি জানান, আমি এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স দুই দেশের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং এই শান্তিপূর্ণ সিদ্ধান্তের জন্য প্রশংসা করেছি।
মার্কিন ঘোষণার পরপরই, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, ভারতের ডিজিএমও (সামরিক অভিযান বিভাগের প্রধান) পাকিস্তানি প্রতিপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন এবং ঠিক হয় ১০ মে সন্ধ্যা ৫টা থেকে স্থল, আকাশ ও সমুদ্রে সব ধরনের সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ থাকবে।
ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, “ভারত সব সময় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আপোষহীন অবস্থানে রয়েছে এবং থাকবে।”
ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি নিয়ে ট্রাম্পের ট্যুইটের তীব্র সমালোচনা করেছে বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, "কেন ট্রাম্প মধ্যস্থতা করবেন? তাঁর মধ্যস্থতা তো কেউ চায়নি।" পরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফ থেকে জানানো হয়, ভারত কারুর মধ্যস্থতা চায় না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন