
ফের সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করলেন দেশের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। তাঁর মতে, “সংসদই সর্বোচ্চ এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই আল্টিমেট মাস্টার্স"। যা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের অতীতের কিছু রায়, যেমন গোলকনাথ (১৯৬৭) এবং কেশবনন্দ ভারতী (১৯৭৩) মামলার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জগদীপ ধনখড়। জরুরি অবস্থার সময় আদালতের ভূমিকারও তীব্র সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, "যে প্রধানমন্ত্রী জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন, ১৯৭৭ সালে তাঁর কাঁধেই দেশের দায়িত্ব চাপে। তাই এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ থাকা উচিত নয়... সংসদের উপর কারও কর্তৃত্বের কথা বলা নেই সংবিধানে। দেশের সংসদই চূড়ান্ত। নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই আল্টিমেট মাস্টার্স। সংবিধানে কী থাকবে, তাঁরাই ঠিক করবেন।"
সুপ্রিম কোর্টকে নিশানা করে ধনখড় আরও বলেন, "একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট বলল, প্রস্তাবনা সংবিধানের অংশ নয় (গোলকনাথ মামলা), অন্য মামলায় বলা হল সেটি সংবিধানের অংশ (কেশবনন্দ ভারতী মামলা)। গণতন্ত্রে আলোচনা জরুরি। আমাদের নীরবতা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। ঐতিহ্য ধরে রাখতে হলে চিন্তাশীল মানুষদের এগিয়ে আসা উচিত।"
তিনি বলেন, "আমার মনে হয়, দেশের নাগরিকরাই শেষ কথা, আর তাঁদের উপরই গণতন্ত্রের নির্মাণ হয়। প্রত্যেকের কিছু না কিছু ভূমিকা রয়েছে। নাগরিকদের নাড়ির সঙ্গে জড়িয়ে গণতন্ত্র। নাগরিক সচেতন হলে, নাগরিকদের যোগদান পেলেই গণতন্ত্র প্রস্ফুটিত হয়।"
এই মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা ও বিশিষ্ট আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। তিনি বলেন, উপরাষ্ট্রপতির এই ধরনের মন্তব্য অনভিপ্রেত।
এর আগেও সুপ্রিম কোর্টের সমালোচনা করেছিলেন ধনখড়। বিধানসভায় বিল পাস হওয়ার পর রাজ্যপাল এবং রাষ্ট্রপতি অনির্দিষ্ট কালের জন্য় তা আটকে রাখতে পারবেন না বলে সম্প্রতি ঐতিহাসিক রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। কারও নাম না নিয়ে তিনি বলেন, কিছু বিচারপতি নিজেদের 'Super Parliament' মনে করছেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবেও সুপ্রিম কোর্টকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট যদি সবকিছু ঠিক করবে, তবে সংসদ ও বিধানসভা বন্ধ করে দেওয়া হোক।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, “শীর্ষ আদালত দেশকে অরাজকতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে” এবং প্রধান বিচারপতিকে এর জন্য দায়ী করেন। যদিও বিজেপির পক্ষ থেকে সাংসদের বক্তব্যকে “ব্যক্তিগত মতামত” বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন