Freebies: পরজীবী শ্রেণি তৈরি হচ্ছে! রাজনৈতিক দলগুলির খয়রাতি নিয়ে তীব্র অসন্তোষ সুপ্রিম কোর্টের

People's Reporter: সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, রাজনৈতিক দলগুলি যে ভাবে খয়রাতি তথা ‘উপহার দেওয়ার রাজনীতি’ শুরু করেছে, তাতে কর্মবিমুখ হচ্ছে মানুষ।
সুপ্রিম কোর্ট
সুপ্রিম কোর্টফাইল ছবি সংগৃহীত
Published on

নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি যে ভাবে খয়রাতি তথা 'ভাতা দেওয়ার রাজনীতি’ শুরু করেছে, তাতে কর্মবিমুখ হচ্ছে মানুষ। বিনামূল্যে রেশন থেকে হাতে নগদ টাকা –এই সমস্ত কিছুর জেরে তৈরি হচ্ছে পরজীবী শ্রেণি। এক মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। উদাহরণ হিসেবে টেনেছে মহারাষ্ট্রের ‘লড়কী বহিন’ প্রকল্পের নাম।

বুধবার শহরাঞ্চলে গৃহহীন মানুষের মাথার উপর আশ্রয়ের অধিকার ও ব্যবস্থা সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসির বেঞ্চ তাৎপর্যপূর্ণ এই মন্তব্য করে। শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরমনী জানান, শহরাঞ্চলকে দরিদ্রমুক্ত করতে চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। গৃহহীন মানুষের মাথার উপর ছাদ গড়ে তুলতে, তাঁদের কাছে অন্য সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার কাজ হচ্ছে।

এতেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন দুই বিচারপতি। তাঁদের কথায়, মানুষদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে নিয়ে আনার বদলে স্রেফ খয়রাতির সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে মানুষের মধ্যে ক্রমশ বাড়ছে কর্মবিমুখতা। দুই বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, “মানুষকে সমাজের মূলস্রোতে এনে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে কার্যত কোনও রাজনৈতিক দলই উৎসাহ দেয় না। ফলে একটি পরজীবী শ্রেণি তৈরি হচ্ছে। ভোটের আগে লড়কী বহিনের মতো একাধিক প্রকল্প চালু করার ফলে মানুষ ক্রমশ কর্মবিমুখ হয়ে উঠেছে। কাজ না করলেও রেশন মিলছে, টাকাও আসছে”।

শহরাঞ্চলে দারিদ্র দূরীকরণ অভিযান কার্যকর করতে কত সময় লাগবে, তার জন্য কেন্দ্রের কাছে তথ্য চেয়ে পাঠায় বিচারপতি গাভাই এবং বিচারপতি মাসির বেঞ্চ। ছ’সপ্তাহ পর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

এর আগেও এই নিয়ে কড়া মন্তব্য করেছিলেন বিচারপতি গাভাই। সেসময় তিনি জানান, বিচারপতিদের বেতন, পেনশন বাকি রয়ে যাচ্ছে। অথচ সরকার খয়রাতির ঘোষণা করে চলছে। অল ইন্ডিয়া জাজেস অ্যাসোসিয়েশনের আবেদনের শুনানিতে ওই মন্তব্য করেন বিচারপতি গাভাই।

সেই সময় বিচারপতি গাভাই পরিষ্কার বলেন, “খয়রাতি এবং জনকল্যাণের মধ্যে ফারাক আছে। বিচারপতিদের টাকা দেওয়ার কথা উঠলে অর্থনৈতিক সঙ্কটের কথা জানানো হয়। কিন্তু নির্বাচনের সময় 'লড়কি বহিন'-এর মতে প্রকল্পের ঘোষণা শুনতে পাই। নির্বাচনে জিততে দিল্লিতেই ২১০০, ২৫০০ টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা হচ্ছে”।

উল্লেখ্য, বাড়ির মহিলাদের হাতে মাসিক নগদ টাকা তুলে দেওয়ার শুরু পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূলের হাত ধরেই। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের সূচনা করেন। এই প্রকল্পের অধীনে প্রথমে মহিলাদের ৫০০ করে টাকা দেওয়া হলেও, পরে তা বাড়িয়ে করা হয় ১০০০। শোনা যাচ্ছে ২০২৬ –এর বিধানসভার আগে নাকি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে ভাতার পরিমাণ।

বাংলার ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ –এর মতোই দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন নামে চালু হয়েছে এইরকমই প্রকল্প। দিল্লি, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং হরিয়ানায় নির্বাচনে জিততে রাজনৈতিক দলগুলির হাতিয়ার সেই খয়রাতি। আর তাতেই অসন্তোষ প্রকাশ শীর্ষ আদালতের।  

সুপ্রিম কোর্ট
RSS: ১৩ তলা ভবনে ৩০০ ঘর - রাজধানীতে আরএসএস-র ১৫০ কোটির বিলাসবহুল সদর দপ্তরে আর কী কী আছে জানেন?
সুপ্রিম কোর্ট
Corruption Perceptions Index 24: দুর্নীতি সূচকে কোথায় দাঁড়িয়ে ভারত? কতটা নামলো বাংলাদেশ ও পাকিস্তান?
সুপ্রিম কোর্ট
L&T Chairman: ভারতীয় শ্রমিকদের কাজ করার ইচ্ছাই নেই! ফের বিতর্কিত মন্তব্য L&T চেয়ারম্যানের

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in