Corruption Perceptions Index 24: দুর্নীতি সূচকে কোথায় দাঁড়িয়ে ভারত? কতটা নামলো বাংলাদেশ ও পাকিস্তান?
বিশ্বজুড়ে দুর্নীতি সূচকে আরও নামলো ভারত। গতকাল, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সালের এই তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। যে তালিকা অনুসারে ১৮০টি দেশের মধ্যে গতবছরের তুলনায় আরও ৩ ধাপ নেমে ভারত পৌঁছে গেছে ৯৬ নম্বরে। ভারতের সঙ্গে একই নম্বরে দাঁড়িয়ে আছে গাম্বিয়া এবং মালদ্বীপ। এই তিন দেশেরই প্রাপ্ত নম্বর ৩৮। গতবছর ভারতের প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৩৯ ভারতের স্থান ছিল ৯৩ নম্বরে। ২০২১ এবং ২০২২ সালের রিপোর্ট অনুসারে ভারতের স্থান ছিল ৮৫ এবং এই দুই বছরেই ভারতের স্কোর ছিল ৪০। সেই হিসেবে ২০২৩-এ ভারত ৮ ধাপ নেমে পৌঁছে গেছিল ৯৩-তে।
প্রতি বছরেই দুর্নীতি ধারণা সূচক বা Corruption Perception Index (CPI) প্রকাশ করে জার্মানির ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (TI)। গত কয়েক বছরের মত এবছরের তালিকাতেও শীর্ষে আছে ডেনমার্ক। যাদের প্রাপ্ত স্কোর ৯০। তালিকায় দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে আছে যথাক্রমে ফিনল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুর। প্রাপ্ত স্কোর ৮৮ ও ৮৪। চতুর্থ এবং পঞ্চম স্থানে আছে নিউজিল্যান্ড এবং লুক্সেমবার্গ। যাদের প্রাপ্ত স্কোর ৮৩ ও ৮১।
তালিকায় একদম নীচের দিকে থাকা তিন দেশের নাম যথাক্রমে সাউথ সুদান, সোমালিয়া এবং ভেনেজুয়েলা। ১৮০ দেশের মধ্যে এই তিন দেশের স্থান যথাক্রমে ১৮০, ১৭৯ ও ১৭৮। এই তিন দেশের প্রাপ্ত স্কোর যথাক্রমে ৮, ৯ এবং ১০।
দুর্নীতি সূচকে ভারত ৯৬ নম্বরে থাকলেও ভারতের প্রতিবেশী বাংলাদেশ ২৩ নম্বর স্কোর করে আছে ১৫১ নম্বরে। অন্য প্রতিবেশী ভুটান ৭২ স্কোর করে স্থান পেয়েছে ১৮ নম্বরে। প্রতিবেশী নেপাল ৩৪ স্কোর করে তালিকায় স্থান পেয়েছে ১০৭ নম্বরে। ৩২ স্কোর করে ১২১ নম্বরে আছে শ্রীলঙ্কা। ২৭ স্কোর করে ১৩৫ নম্বরে পাকিস্তান। ১৬ স্কোর করে ১৬৮ নম্বর স্থানে আছে মায়ানমার।
কীভাবে ওই কমিটি রিপোর্ট তৈরি করে? অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দেশগুলির কাজের ভিত্তিতে নম্বর দেওয়া হয়। সবথেকে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ পায় শূন্য। আর শীর্ষে থাকা দুর্নীতিমুক্ত দেশ পায় ১০০ নম্বর। সেই মূল্যায়নে ভারত এবার পেয়েছে এবার ৩৮ নম্বর। চিন ৪৩ এবং বাংলাদেশ ২৩ পেয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে ২০২৪ সালে দুর্নীতি ধারণা সূচক (সিপিআই) থেকে দেখা যাচ্ছে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই দুর্নীতি এক বিপজ্জনক সমস্যা। যদিও বেশ কিছু দেশে এর বিরুদ্ধে লাগাতার লড়াই চলছে। সমীক্ষা অনুসারে, জলবায়ু সংক্রান্ত কাজকর্মের ক্ষেত্রে দুর্নীতি এক বড়ো সমস্যা হয়ে দেখা দিচ্ছে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের প্রধান ফ্রাঙ্কোইস ভ্যালেরিয়ান ওই প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, দুর্নীতি বিশ্বজুড়ে এক ক্রমবর্ধমান হুমকি। যা উন্নয়নকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেয়েও আরও বেশি কিছু করে। দুর্নীতিই গণতন্ত্রের পতন, অস্থিতিশীলতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক মূল কারণ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং প্রতিটি জাতিকে দুর্নীতি মোকাবিলার বিষয়টিকে শীর্ষ এবং দীর্ঘমেয়াদী অগ্রাধিকার হিসাবে বিবেচনা করতে হবে। কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে লড়াই এবং শান্তিপূর্ণ, মুক্ত বিশ্ব গড়ে তোলার জন্য যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই বছরের দুর্নীতি ধারণা সূচকে প্রকাশিত বিপজ্জনক প্রবণতাগুলি বিশ্বব্যাপী দুর্নীতি মোকাবিলায় এখনই সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়।
সংস্থার ওয়েবসাইটে দুর্নীতির সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলা হয়েছে, ব্যক্তিগত লাভের জন্য প্রাপ্ত ক্ষমতার অপব্যবহারকে দুর্নীতি বলে। দুর্নীতি আস্থা নষ্ট করে, গণতন্ত্রকে দুর্বল করে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ব্যাহত করে এবং বৈষম্য, দারিদ্র্য, সামাজিক বিভাজন ও পরিবেশগত সংকট আরও বাড়িয়ে তোলে। দুর্নীতিকে সামনে আনা এবং দুর্নীতিবাজদের জবাবদিহির আওতায় আনা কেবল তখনই সম্ভব যখন আমরা দুর্নীতি কীভাবে কাজ করে এবং কীভাবে দুর্নীতি সক্রিয় হয় সেই ব্যবস্থাগুলিকে বুঝতে পারি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন