
ভারতের নির্মাণ শিল্পে শ্রমিক সংকট নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে আবারও খবরের শিরোনামে লারসেন অ্যান্ড টুব্রো (L&T)-এর চেয়ারম্যান এস. এন. সুব্রহ্মণ্যম। ভারতের শ্রমিকদের অন্য স্থানে কাজ করার ইচ্ছা নেই বলেই তিনি জানান। তাঁর মতে শ্রমিকদের আগ্রহ না থাকার কারণ একাধিক অনুদানমূলক সরকারি প্রকল্প।
চেন্নাইয়ে আয়োজিত CII Mystic South Global Linkages Summit 2025-এ বক্তৃতা দিতে গিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন এস. এন. সুব্রহ্মণ্যম। তিনি বলেন, শ্রমিকরা এখন কাজের জন্য স্থানান্তর হতে অনাগ্রহী, যার ফলে নির্মাণ কাজে কর্মী সঙ্কট দেখা দিচ্ছে।
সুব্রহ্মণ্যম মনে করেন, কেন্দ্রের বিভিন্ন কল্যাণমূলক প্রকল্প, যেমন—মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট (MGNREGA), ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার (DBT) ও জন ধন অ্যাকাউন্ট-এর মতো প্রকল্প উদ্যোগ শ্রমিকদের শহরমুখী হতে নিরুৎসাহিত করছে। তিনি বলেন, “শ্রমিকরা এখন আর অন্য জায়গায় যেতে চান না। হয়তো তাদের স্থানীয় অর্থনীতি ভালো রয়েছে অথবা বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কারণে তারা শহরে আসতে চাইছে না। এর প্রভাব পড়ছে নির্মাণ শিল্পের ওপর।”
তিনি আরও দাবি করেন, এলঅ্যান্ডটি-তে চার লক্ষ স্থায়ী শ্রমিকের প্রয়োজন, অথচ কর্মী না পাওয়ার কারণে এবং বারবার ছাঁটাইয়ের কারণে ১৬ লক্ষ লোক নিয়োগ করতে হয়েছে। পাশাপাশি, মধ্যপ্রাচ্যে ভারতীয় শ্রমিকদের বেতনের পরিমাণ ভারতীয় মজুরির তুলনায় ৩ থেকে ৩.৫ গুণ বেশি হওয়ায়, সেখানে শ্রমিকরা যেতে বেশী আগ্রহী বলে মনে করছেন তিনি। L&T চেয়ারম্যানের এই বক্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
তবে এই প্রথম নয়। এর আগেও বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন তিনি। সপ্তাহে ৯০ ঘন্টা কাজ করার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন তিনি। চলতি বছরের শুরুতে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে বহুজাতিক সংস্থার এই চেয়ারম্যানকে বলতে শোনা যায়, ‘রবিবার আমদের সমস্ত কাজ বন্ধ থাকে। এর জন্য আমার আফসোস হয়। যদি রবিবার অফিস খোলা থাকত, আমিও কাজ করতাম এবং আপনাদের (কর্মীদের) দিয়ে কাজ করাতাম তাহলে খুশি হতাম। বাড়িতে এতক্ষণ থেকে কী করবে মানুষ? কতক্ষণ একজন স্বামী তাঁর স্ত্রীর মুখ দেখবেন? একজন স্ত্রীই বা কতক্ষণ বাড়ি বসে তাঁর স্বামীর মুখ দেখতে পারবেন? তার চেয়ে ভাল হয় সকলে অফিসে গিয়ে কাজ করুন। তাতে জীবনে উন্নতি হবে।’’
অন্যদিকে, সাম্প্রতিক এক অর্থনৈতিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে সপ্তাহে ৬০ ঘণ্টার বেশি কাজ স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। গবেষণা অনুযায়ী, যাঁরা দৈনিক ১২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে কাজ করেন, তাঁদের মানসিক চাপ ও হতাশা বেশি থাকে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন