
মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ারের বিরুদ্ধে এক মহিলা আইপিএস অফিসারকে "হুমকি" দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যা নিয়ে শাসক-বিরোধী দুই শিবিরের মধ্যে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে।
শুক্রবার একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্যে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে (ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার)। শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে) তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছে এবং অভিযোগ করেছে, তিনি অবৈধ খননের সঙ্গে যুক্ত নিজের দলের কর্মীদের রক্ষা করছেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, পাওয়ার সোলাপুরের করমালা বিভাগের এসডিপিও (SDPO) অঞ্জনা কৃষ্ণা এক এনসিপি কর্মীর ফোন থেকে কথা বলছেন। কৃষ্ণা অবৈধ মোরাম খননের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছিলেন। তাঁর কাছে অভিযোগ আসে, কুর্দু গ্রামের রাস্তা নির্মাণের জন্য অবৈধ ভাবে মাটি-মোরাম খনন করা হচ্ছে। তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পৌঁছোন তিনি এবং খনন বন্ধ করার নির্দেশ দেন। তখনই স্থানীয় এনসিপি নেতা জগতাপ যাদব ফোন করেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ারকে।
ফোনে অঞ্জনা কৃষ্ণাকে তিনি বলেন, “আমি উপ-মুখ্যমন্ত্রী বলছি এবং আপনাকে আদেশ দিচ্ছি অবৈধ মোরাম খননের বিরুদ্ধে অভিযান বন্ধ করুন।” অফিসার উপ-মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠ চিনতে পারেননি। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমি বুঝতে পারছি না যে আমি উপমুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছি কি না! দয়া করে আমার মোবাইল নম্বরে ফোন বা হোয়াট্সঅ্যাপ করুন।’’
এতে আরও ক্ষুব্ধ হন ফোনের পর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি। তিনি হুমকির সুরে বলেন, “আমি আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।” মহিলা অফিসারের ‘স্পর্ধা’ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে) নেতা সঞ্জয় রাউত কড়া সমালোচনা করে বলেন, "একজন আইপিএস অফিসারকে হুমকি দিচ্ছেন কেবল নিজের দলের চোরদের বাঁচাতে। অবৈধ মোরাম খনন মানে রাজ্যের কোষাগারকে ঠকানো। অজিত পাওয়ারের কোনও নৈতিক অধিকার নেই সরকারে থাকার"।
এনসিপি-র রাজ্য সভাপতি সুনীল তটকারে বলেন, “এটাই অজিত দাদার স্বাভাবিক ভঙ্গি। তিনি হুমকি দেননি। গণতন্ত্রে মানুষ অভিযোগ তোলে, আর নেতা হিসেবে তিনি সেটাই অফিসারদের জানান।”
রাজস্বমন্ত্রী চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে বলেন, “অজিত পাওয়ার কখনও অবৈধ কাজের পক্ষে নেই। ভিডিওতে যা ছড়িয়েছে, সেটি কেবল তাঁর মানুষের অভিযোগ শোনার ও সমাধান করার চেষ্টা।”
দুই মিনিটের ওই ভিডিওতে পাওয়ারকে কৃষ্ণাকে ভিডিও কল করতেও দেখা যায় এবং তাঁকে অভিযান বন্ধ করার নির্দেশ দিতে শোনা যায়। এই ঘটনাকে ঘিরে শাসকজোট এনসিপি–বিজেপি–শিবসেনার মধ্যে অস্বস্তি বাড়ছে, আর বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছে সরকার অবৈধ খননকারীদের আড়াল করছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন