Karnataka: এবার কর্ণাটকে দৈনিক ১০ ঘণ্টা কাজের প্রস্তাব, বিরোধিতায় KITU সহ একাধিক শ্রমিক ইউনিয়ন

People's Reporter: KITU সাধারণ সম্পাদক সুহাস আদিগা এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, সরকারের এই প্রস্তাব অমানবিক এবং এটা আধুনিক দাসত্ব চাপিয়ে দেবার চেষ্টা।
ছবি প্রতীকী
ছবি প্রতীকী ফাইল ছবি - KITU ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত
Published on
Summary

• অন্ধ্রপ্রদেশের পর এবার কর্ণাটকেও দিনে ১০ ঘণ্টা কাজের প্রস্তাব।

• কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ অনুসারেই এই প্রস্তাব, জানিয়েছে কর্ণাটক সরকার।

• কর্পোরেটকে খুশি করতে মানুষকে দাসত্বের দিকে ঠেলে দিতে চাইছে সরকার, জানালো KITU

• ইতিমধ্যেই ছত্তিশগড়, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখন্ডে কাজের সময় বাড়ানো হয়েছে।

অন্ধ্রপ্রদেশের পর এবার কর্ণাটকেও আসতে চলেছে শ্রম আইন সংশোধন। কর্ণাটক শপস অ্যান্ড কমার্শিয়াল এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট, ১৯৬১-এর প্রস্তাবিত বদলে কাজের সময় বাড়িয়ে ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা করা হবে (Karnataka 10-hour workday)। এছাড়াও ওভারটাইমের সময় প্রতিদিনের ১ ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে ২ ঘণ্টা করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। যা নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। সম্প্রতি ইনফোসিস কর্তা নারায়ণ মূর্তি থেকে শুরু করে একাধিক কর্পোরেটের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত কাজের সময়ের পক্ষে সওয়াল করা হয়েছে।

কর্ণাটক সরকারের পক্ষ থেকে এই আইনে সংশোধনীর যে প্রস্তাব রাখা হয়েছে তাতে দৈনিক কাজের সময় ১ ঘণ্টা বাড়ানো এবং ওভারটাইম ১ ঘণ্টা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। যা কার্যকরী হলে দিনে ১২ ঘণ্টা কাজ আইনত মান্যতা পাবে। এই সংশোধনীতে তিন মাসের সময়সীমায় ওভারটাইমের সময় ৫০ ঘন্টা থেকে বাড়িয়ে ১৪৪ ঘন্টা করার এবং ১০ জনের কম কর্মচারী রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলিকে এই আইনের আওতা থেকে বাদ দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

প্রস্তাবিত এই সংশোধনী প্রসঙ্গে কর্ণাটক সরকার জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার সমস্ত রাজ্য সরকারকে কাজের সময় বাড়ানোর জন্য জানিয়েছে। ইতিমধ্যেই ছত্তিশগড়, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখন্ডে কাজের সময় বাড়ানো হয়েছে।

যদিও সরকারের এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেছে বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়ন। এই বিষয়ে বুধবার ১৮ জুন বেঙ্গালুরুতে শ্রম কমিশনার এইচ এন গোপালকৃষ্ণর সঙ্গে এক বৈঠকে বসে বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল। যে বৈঠকে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা হয়েছে।

কর্ণাটক স্টেট আইটি/আইটিস এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন-এর (KITU) সাধারণ সম্পাদক সুহাস আদিগা এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, সরকারের এই প্রস্তাব অমানবিক এবং এটা আধুনিক দাসত্ব চাপিয়ে দেবার চেষ্টা। কিটু তীব্রভাবে এই সংযোজন-এর প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কারণ এই প্রস্তাব যে কোনও কর্মীর ব্যক্তিগত জীবনের অধিকারের ওপর আক্রমণ। এই প্রস্তাব আসলে দিনে ১২ ঘণ্টা কাজ করানোর প্রচেষ্টাকে মান্যতা দেবার চেষ্টা করে এবং এর মাধ্যমে গত কয়েক দশক ধরে চলে আসা শ্রমিকদের সুরক্ষার অধিকার কেড়ে নেয়।

আদিগা আরও জানিয়েছেন, এর ফলে বিভিন্ন কর্পোরেট তিন শিফটের বদলে দুই শিফটে কাজ করানো শুরু করবে এবং এর ফলে এক তৃতীয়াংশ কর্মী ছাঁটাই হবে। সরকার মানুষের জীবনের বিনিময়ে কর্পোরেটদের খুশি করার পথে হাঁটছে।

এদিনের বৈঠকের পর কিটু-র সোশ্যাল মিডিয়া পেজে এক বিবৃতিতে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন, "বৈঠকে KITU আইটি কর্মীদের মধ্যে বর্ধিত কাজের সময়ের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব সংক্রান্ত গবেষণার দিকে ইঙ্গিত করে। কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত, "রাজ্যের মানসিক সুস্থতা প্রতিবেদন ২০২৪" জানাচ্ছে যে, ভারতে ২৫ বছরের কম বয়সী ৯০% কর্পোরেট কর্মী উদ্বেগের সাথে লড়াই করছেন।"

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, "অতিরিক্ত কাজের চাপের কারণে মৃত্যু এবং আত্মহত্যা আইটি সেক্টরে সাধারণ হয়ে উঠছে। সম্প্রতি বেঙ্গালুরুতে OLA-র কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ইউনিটে একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের আত্মহত্যা, চরম কাজের চাপের কারণে, এই পরিস্থিতিকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। কাজের সময় বৃদ্ধি এই পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করবে। কর্ণাটক সরকার, তাদের কর্পোরেট কর্তাদের খুশি করার লোভে, যেকোনো ব্যক্তির সবচেয়ে মৌলিক অধিকার - বেঁচে থাকার অধিকার - সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করছে।"

চলতি মাসের প্রথম দিকে একইভাবে কাজের সময় বাড়ানোর কথা জানিয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের তেলেগু দেশম সরকার। সেক্ষেত্রে চন্দ্রবাবু নাইডুর সরকারের যুক্তি,  এই সিদ্ধান্ত শিল্পে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সহায়তা করবে। বিনিয়োগ বাড়লে বাড়বে কাজের সুযোগও। এতে আখেরে কর্মচারীরাই লাভবান হবেন।

যদিও অন্ধ্র সরকারের এই সংশোধনীর বিরুদ্ধে ট্রেড ইউনিয়নগুলির পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরাও ক্ষোভে ফুঁসছেন। তাঁদের অভিযোগ, এই সিদ্ধান্ত শ্রমিকদের কল্যাণ ও অধিকারকে উপেক্ষা করছে এবং "দাসত্বের" দিকে ঠেলে দিচ্ছে কর্মীদের।

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২৪ সালে কর্ণাটক সরকার তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দিনে ১৪ ঘণ্টা কাজের প্রস্তাব দিয়েছিল। সেইসময়েও তথ্যপ্রযুক্তি ইউনিয়ন কিটুর তীব্র আন্দোলনের জেরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটে সিদ্দারামাইয়ার নেতৃত্বাধীন রাজ্যের কংগ্রেস সরকার।

Keywords: Karnataka 10-hour workday, Karnataka labour law proposal, KITU protest Karnataka, Karnataka worker unions news, Karnataka daily work hours, Indian labour laws update, Karnataka government labour reform, Workers union Karnataka news, Trade union protest India, Labour policy Karnataka 2025

ছবি প্রতীকী
Andhra Pradesh: দৈনিক ১০ ঘন্টা ডিউটি বাধ্যতামূলক! অন্ধ্র সরকারের সংশোধিত আইন নিয়ে তীব্র বিতর্ক
ছবি প্রতীকী
70 hour workweek: ইনফোসিস সহ-প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণমূর্তির ৭০ ঘণ্টা কাজের প্রস্তাব; বিরোধিতায় চিদাম্বরম

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in