
অন্ধ্রপ্রদেশে এবার থেকে ন্যূনতম ১০ ঘন্টা করে দৈনিক কাজ করতেই হবে কর্মচারীদের। আগে এই সময় ছিল ৯ ঘন্টা। পাশাপাশি মহিলাদের জন্য রাতে কাজের সুবিধা দেওয়া হয়েছে নয়া নিয়মে। সরকারের দাবি, নতুন আইনের ফলে রাজ্যে বিনিয়োগের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে। তবে এই পদক্ষেপ নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক ও সমালোচনা।
অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার বেসরকারি কারখানা ও সংস্থাগুলির জন্য দৈনিক কর্মঘন্টা ৯ থেকে বাড়িয়ে ১০ ঘণ্টা করেছে। রাজ্য সরকারের যুক্তি, এই সিদ্ধান্ত শিল্পে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সহায়তা করবে। বিনিয়োগ বাড়লে বাড়বে কাজের সুযোগও। এতে আখেরে কর্মচারীরাই লাভবান হবেন।
তেলুগু দেশম পার্টির (টিডিপি) নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের দাবি, এই পরিবর্তন ‘আইটি এবং গ্লোবাল ক্যাপাবিলিটি সেন্টার (জিসিসি) নীতি ৪.০’-এর সহায়ক এবং কর্মজীবন ও ব্যক্তি জীবনের মধ্যে ভারসাম্যমূলক সম্পর্ক গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।
মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু জানান, “এই সংস্কারগুলি কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অর্থনৈতিক বিকাশ এবং কর্ম-জীবন ভারসাম্য গঠনের বৃহত্তর কৌশলের অংশ। দীর্ঘমেয়াদে এই উদ্যোগে উপকৃত হবেন রাজ্যের হাজার হাজার তরুণ।”
কর্মঘন্টা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে ওভারটাইমের সময়ও। পূর্বে কর্মচারীরা প্রতি ত্রৈমাসিকে সর্বোচ্চ ৭৫ ঘন্টা ওভারটাইম করতে পারতেন। বর্তমানে প্রতি ত্রৈমাসিকে ১৪৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ওভারটাইম করতে পারবেন কর্মচারীরা।
নতুন আইনের আওতায় নারীদের জন্য রাতের শিফটে কাজের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে এটা শর্ত সাপেক্ষে। মহিলাদের জন্য নিরাপত্তা ও যাতায়াতের ব্যবস্থা থাকবে।
অন্ধ্র সরকারের এই সংশোধনীর বিরুদ্ধে ট্রেড ইউনিয়নগুলির পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরাও ক্ষোভে ফুঁসছেন। তাঁদের অভিযোগ, এই সিদ্ধান্ত শ্রমিকদের কল্যাণ ও অধিকারকে উপেক্ষা করছে এবং "দাসত্বের" দিকে ঠেলে দিচ্ছে কর্মীদের।
অন্ধ্রপ্রদেশের তথ্য ও জনসংযোগমন্ত্রী কে পার্থসারথি জানান, শ্রম আইনের পরিবর্তনের ফলে আমাদের রাজ্যে বিনিয়োগ আরও বৃদ্ধি পাবে। কারাখানাগুলিতেও বিনিয়োগ হবে। এতে লাভবান হবেন শ্রমিকরাই। অন্ধ্রপ্রদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আইনের সংশোধন প্রয়োজন ছিল।
যদিও টিডিপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের শ্রম আইন সংশোধন নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন বিরোধীরা। বিরোধীদের অভিযোগ, এই আইনের ফলে শ্রমিকদের উপর চাপ আরও বাড়বে। শ্রমিকদের স্বার্থ বিরোধী এমন আইন বাতিল করা উচিত।
ট্রেড ইউনিয়ন নেতারা বলছেন, "এই সিদ্ধান্ত শ্রমিকদের জন্য একেবারেই প্রতিকূল। এটা একটা বিশ্বাসঘাতকতা। সরকার শিল্পপতিদের স্বার্থে শ্রমিকদের শোষণ করছে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন