
গুজরাটের শীর্ষস্থানীয় খবরের কাগজ গুজরাট সমাচারের সহ-স্বত্বাধিকারী (Co-Owner) বাহুবলী শাহের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানালো প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়া। দেশের মধ্যে অন্যতম প্রধান পুরোনো ও সর্বাধিক প্রচারিত আঞ্চলিক সংবাদপত্র হিসেবে পরিচিত গুজরাট সমাচার। বৃহস্পতিবার রাতে ৩৬ ঘণ্টা তল্লাশি চালানোর পরে আর্থিক অস্বচ্ছতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় বর্ষীয়ান বাহুবলী শাহকে। যদিও পরে শারীরিক কারণে বিশেষ পিএমএলএ (PMLA) আদালত তাঁকে অন্তর্বর্তী জামিন দেয়। যদিও এই বিষয়ে ইডি-র পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও বিবৃতি জারি করা হয়নি।
প্রেস ক্লাব ছাড়াও ওই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছে ইন্ডিয়ান ওম্যানস প্রেস কর্পস, প্রেস অ্যাসোসিয়েশন, দিল্লি ইউনিয়ন অফ জার্নালিস্ট, কেরালা ইউনিয়ন অফ ওয়ার্কিং জার্নালিস্ট প্রমুখ সংস্থা। যাদের পক্ষ থেকে এই গ্রেপ্তারির প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইডি-র হাতে বাহুবলী শাহের গ্রেপ্তারের ঘটনা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর আঘাত। এই ঘটনা ভারতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারকে লঙ্ঘিত করেছে। গুজরাট সমাচার, এক সম্মানীয় প্রকাশনা সংস্থা, যারা দীর্ঘদিন ধরে স্বাধীন সংবাদমাধ্যম হিসেবে সুনামের সঙ্গে কাজ করছে এবং গুজরাট সহ অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের কন্ঠস্বর হিসেবে পরিচিত। ইডি-র হাতে এই গ্রেপ্তারি আবারও একাধিক প্রশ্ন তুলেছে।
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বারবার ইডি এবং এই ধরণের সংস্থাগুলি ব্যবহার করে সংবাদমাধ্যমকে হেনস্থার চেষ্টা সংবিধানের মৌলিক নীতিগুলিকেই লঘু করে এবং এই ধরণের সংস্থাগুলির প্রতি সাধারণ মানুষের বিশ্বাস তলানিতে নিয়ে যায়।
হিন্দুস্থান টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, গুজরাট সমাচারের এডিটর-ইন-চিফ এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর শ্রেয়ান শাহ জানিয়েছেন, তাঁর ভাইকে কোনো লিখিত নোটিশ ছাড়াই ইডি ৩৬ ঘণ্টা তল্লাশির পর গ্রেপ্তার করেছে। তাঁর মতে, এই গ্রেপ্তারির পেছনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা কাজ করেছে।
শ্রেয়ান শাহ আরও জানিয়েছে, যে লেনদেন দিয়ে অভিযোগ তা কুড়ি বছর আগের। সমস্ত লেনদেন ব্যাঙ্কের মাধ্যমে হয়েছে। আমরা এই বিষয়ে আদালতে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত। আমাদের কোনও অপরাধমূলক অতীত নেই। আমার ভাইয়ের সঙ্গে কেন এই ধরণের ব্যবহার করা হচ্ছে?
গত ১৪ মে আয়কর বিভাগের পক্ষ থেকে গুজরাট সমাচারের সঙ্গে যুক্ত একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়। যার মধ্যে ছিল সংস্থার প্রধান কার্যালয়, বাহুবলী শাহের বাড়ি, শ্রেয়ান শাহের বাড়ি এবং গুজরাট সমাচারের চ্যানেল অফিস জিএসটিভি।
গুজরাটের বিধায়ক এবং কংগ্রেস নেতা জিগনেশ মেভানি ইডির তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, “গুজরাট সমাচার এবং এর মালিকদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে কারণ, গত ২৫ বছর ধরে, সংবাদপত্রটি কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন