
পাকিস্তানের মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরতে এবং আন্তর্জাতিক মহলে ইসলামাবাদকে কূটনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করতে দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলি একজোট হয়েছে। চলতি মাসের শেষের দিকে সাতটি সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দেশে সফর করবে। এই প্রতিনিধি দলগুলির একটির নেতৃত্বে কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর।
শশী থারুর ছাড়াও ইন্ডিয়া মঞ্চের শরিক ডিএমকে-র কানিমোঝি করুণানিধি এবং এনসিপি (শরদ পাওয়ার)-র সুপ্রিয়া সূলেও নেতৃত্বে রয়েছেন। পাশাপাশি বিজেপির রবি শঙ্কর প্রসাদ ও বৈজয়ন্ত পান্ডা, জেডিইউ-র সঞ্জয় কুমার ঝা এবং শিবসেনার শ্রীকান্ত শিন্ডেও রয়েছেন তালিকায়। এই ৭ জনের নেতৃত্বে সাতটি দল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাবেন।
জানা যাচ্ছে প্রত্যেক দলে ৫-৮ জন সদস্য থাকবেন। তাঁরা কেউ সিপিআইএম, তৃণমূল, বিজেডি, ডিএমকে বা বিজেপির প্রতিনিধি হতে পারেন।
সূত্রের খবর, রবি শঙ্কর প্রসাদ সৌদি আরব, বাহরাইন, কুয়েত ও আলজেরিয়ায় সফররত একটি দলের নেতৃত্ব দেবেন। তাঁর দলে থাকবেন প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী, পুরন্দরেশ্বরী এবং এম জে আকবর।
সুপ্রিয়া সূলের নেতৃত্বাধীন দল যেতে পারেন ওমান, কেনিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইজিপ্ট। সঞ্জয় কুমার ঝা-র নেতৃত্বাধীন দল যেতে পারে জাপান, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “সীমান্ত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের চলমান লড়াই এবং অপারেশন সিঁদুর-এর প্রেক্ষাপটে এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় ঐক্য ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির বার্তা বিশ্ব দরবারে তুলে ধরা হবে।”
সরকারি বিবৃতি শেয়ার করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু এক্স-এ লেখেন, “সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলিতে ভারত ঐক্যবদ্ধ। এই সর্বদলীয় সফর জাতীয় ঐক্যের প্রতিফলন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের দৃঢ় বার্তা।”
কেন্দ্রের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে এক্স-এ এক পোস্টে শশী থারুর জানান, “জাতীয় স্বার্থে যখনই আমার প্রয়োজন পড়বে, আমি সেই দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত।”
অন্যদিকে, কংগ্রেসের তরফ থেকে দলের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ জানান, সরকারের অনুরোধে তাঁরা চারজন সাংসদের নাম পাঠিয়েছেন - আনন্দ শর্মা, গৌরব গগৈ, সৈয়দ নাসির হুসেন এবং রাজা ব্রার। এই তালিকায় নাম নেই শশী থারুরের।
উল্লেখ্য, ১৯৯৪ এবং ২০০৮ সালে পাকিস্তানের যোগ থাকা সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ভারত একই ধরনের কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছিল। ১৯৯৪ সালে, তৎকালীন বিরোধী নেতা অটল বিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল জেনেভায় রাষ্ট্রসংঘ অধিবেশনে অংশ নিয়েছিল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই সর্বদলীয় উদ্যোগ কূটনৈতিক স্তরে যতটা গুরুত্বপূর্ণ, অভ্যন্তরীণ রাজনীতির ক্ষেত্রেও তা তাৎপর্যপূর্ণ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন