

হ্যাটট্রিক হল না আপের। ২৬ বছর পর রাজধানীতে ক্ষমতার দখল নিচ্ছে পদ্মশিবির। পরাজিত হয়েছেন আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এই মুহুর্তে যা পরিস্থিতি তাতে বিজেপির দিল্লিতে সরকার গঠন শুধু সময়ের অপেক্ষা। দিল্লিতে আপের এই খারাপ ফলাফলের জন্য কেজরিওয়ালের আবগারি নীতি দুর্নীতিকেই দায়ী করছেন তাঁর রাজনীতি জীবনের শিক্ষাগুরু আন্না হাজারে।
২০১১ সালে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছিলেন আন্না হাজারে। আমরণ অনশনে বসেছিলেন তিনি। সেই অনশন মঞ্চ থেকেই জন্ম নেয় আম আদমি পার্টি। আর দলের প্রধান হিসেবে রাজনীতির ময়দানে আবির্ভাব ঘটে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন তিনি। তাঁর এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই-ই ২০১৫ ও ২০২০ পরপর দু’বার তাঁকে দিল্লির মসনদে বসতে সহায়তা করেছিল। কিন্তু সেই ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে আবগারি দুর্নীতি। এমনটাই মনে করেছেন সমাজকর্মী আন্না হাজারে।
আপের হার নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, আন্না হাজারে বলেন, “আমি সবসময় বলে এসেছি, একজন জনপ্রতিনিধির আচরণ, চিন্তাভাবনা স্বচ্ছ হওয়া উচিত। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে হয় না, জীবনে ত্যাগ থাকতে হয়। তাহলেই ভোটাররা তাঁকে বিশ্বাস করতে পারেন। আমি কেজরিওয়ালকে সেই কথা বলেছিলাম, কিন্তু তিনি শোনেননি”।
আন্না হাজারে স্পষ্ট বলেন, “টাকার ক্ষমতায় বুঁদ হয়ে গিয়েছিলেন কেজরিওয়াল। শুধু মদের উপরেই নজর ছিল। আমি তাঁকে অনেকবার বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তিনি আমার কথার গুরুত্ব দেননি”।
উল্লেখ্য, বরাবরই দিল্লির আবগারি দুর্নীতির বিরোধিতা করেছেন আন্না হাজারে। এর আগে ২০২২ সালে আবগারি দুর্নীতি নিয়ে কেজরিওয়ালকে তীব্র ভর্ৎসনা করে তাঁকে চিঠি লিখেছিলেন আন্না হাজারে। চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, “তুমি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে আমি এই প্রথম চিঠি লিখছি। তোমার সরকারের আবগারি নীতি নিয়ে সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন পড়ে আমি আহত হয়েছি। তুমি তোমার বই ‘স্বরাজে’ আবগারি নীতি নিয়ে আদর্শের কথা লিখেছিলে। বইটির ভূমিকা আমিই লিখেছিলাম। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হয়ে সেই সব আদর্শ তুমি ভুলে গেছ”।
প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত, দিল্লিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা (৩৬) থেকে অনেক বেশি এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। অন্যদিকে, ৩০ আসনের গণ্ডি এখনও পেরোতে পারেনি আপ। বিজেপি এগিয়ে ৪৮ টি আসনে। সেখানে আপ এগিয়ে ২২ টিতে। ইতিমধ্যে নয়া দিল্লি আসনে পরাজিত হয়েছেন আপ সুপ্রিমো কেজরিওয়াল, জংপুরাতে পরাজিত দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া। অন্যদিকে, কালকাজি আসনে বিজেপির রমেশ বিধুরিকে হারিয়ে জিতেছেন আপের অতিশী।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন