
লেফট্যানেন্ট গভর্নর ভি কে সাক্সেনার হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অতিশী মারলেনা। রবিবার সকালে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন। গতকালই দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয় ঘটেছে আম আদমি পার্টির। এদিন নিয়ম মেনেই তিনি তাঁর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ইস্তফার পর তিনি আপ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।
রাজনৈতিক মহলের সূত্র অনুসারে আগামী সপ্তাহেই দিল্লিতে সরকার গঠনের দাবি জানাবে বিজেপি। পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বিজেপি শিবিরে একাধিক নাম নিয়ে আলোচনা হলেও মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে এখনও স্পষ্টভাবে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কিছু জানায়নি। যদিও এদিন সকালেই মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে নাম থাকা পরবেশ ভারমা দিল্লির লেফট্যানেন্ট গভর্নরের সঙ্গে দেখা করেন। এবারের নির্বাচনে নিউ দিল্লি কেন্দ্রে এই পরবেশ ভারমার কাছেই পরাজিত হয়েছেন আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
দিল্লিতে ২৬ বছর পর ক্ষমতাসীন হতে চলেছে বিজেপি। সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে ৭০ আসন বিশিষ্ট দিল্লি বিধানসভায় বিজেপি জয়ী হয়েছে ৪৮ আসনে এবং আম আদমি পার্টি জয়ী হয়েছে ২২ আসনে। উল্লেখযোগ্য ভাবে অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মনীশ সিসোদিয়া, সৌরভ ভরদ্বাজ সহ আপ শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব এই নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। যদিও কালকাজী কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী অতিশী মারলেনা।
একনজরে দিল্লির পূর্ববর্তী মুখ্যমন্ত্রীরা
বিধানসভা হবার পর ১৯৯৩ সালে দিল্লির প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন বিজেপির মদনলাল খুরানা। যদিও বছর দুয়েক পরেই হাওয়ালা কান্ডে তাঁর নাম জড়ানোয় তিনি ইস্তফা দিতে বাধ্য হন।
এরপর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হন সাহেব সিং ভারমা। এই সাহেব সিং ভারমার ছেলে পরবেশ ভারমাই এবারের নির্বাচনে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে পরাস্ত করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে গদিতে বসার বছর দুয়েকের মধ্যেই পেঁয়াজের দাম নিয়ে কড়া সমালোচনার মুখে দু বছরের বেশি কিছু সময় পরে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন।
এরপর দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রী হন সুষমা স্বরাজ। যদিও মাত্র ৫২ দিন তিনি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব সামলান।
১৯৯৮ সালের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হয় বিজেপি এবং জয়ী হয় কংগ্রেস। সেবার কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হন শীলা দীক্ষিত। টানা প্রায় ১৫ বছর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব সামলানোর পর ২০১৩ সালের নির্বাচনে তিনি অরবিন্দ কেজরিওয়ালের কাছে পরাজিত হন। যদিও সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকা সত্ত্বেও কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গঠন করে আপ।
২০১৫-র নির্বাচনে একক শক্তিতে ক্ষমতায় আসে আপ এবং মুখ্যমন্ত্রী হন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এরপর ২০২০-র নির্বাচনেও একক শক্তিকে ক্ষমতায় ফেরে আপ। এবারেও মুখ্যমন্ত্রী হন অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন