
প্রয়াত হলেন কেরালার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ সিপিআইএম নেতা ভি এস অচ্যুতানন্দন (VS Achuthanandan)। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ১০১ বছর। সিপিআইএম-র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন তিনি।
গত ২৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই তিরুবনন্তপুরমের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ভি এস অচ্যুতানন্দন। সোমবার বিকেলে তিনি মারা যান। সূত্রের খবর, তাঁকে দেখতে হাসপাতালে যান কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, অর্থমন্ত্রী কে এন বালাগোপাল, সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক (কেরালা) সহ অন্যান্য নেতারা।
১৯২৩ সালের ২০ অক্টোবর ভেলিক্কাকাথু শঙ্করণ অচ্যুতানন্দনের জন্ম। যিনি পরবর্তী সময়ে ‘ভিএস’ নামেই পরিচিত হন। মাত্র ৪ বছর বয়সে মা এবং ১১ বছর বয়সে বাবাকে হারানোর পর তিনি লেখাপড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। সংসার চালাতে দাদার সঙ্গে যোগ দেন দরজির কাজে।
১৯৩৮ সালে ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সংস্পর্শে আসেন। ১৯৪০ সালে তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই)-এর সদস্য হন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন সময় প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর তিনি কারাগারে ছিলেন। প্রায় সাড়ে চার বছর রাজনৈতিক কারণে তাঁকে আত্মগোপন করে থাকতে হয়।
১৯৫৭ সালে তিনি সিপিআই কেরালা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হন। ১৯৬৪ সালে সিপিআই ভেঙে যাবার সময় তিনি সিপিআই(এম)-এ যোগ দেন। যে ৩২ জন সিপিআই জাতীয় পরিষদ সদস্য বেরিয়ে এসে ওই সময় সিপিআই(এম) গঠন করেছিলেন তাঁদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত কেবলমাত্র তিনিই বেঁচে ছিলেন।
১৯৮০ থেকে ১৯৯২ তিনি সিপিআইএম কেরালা রাজ্য কমিটির সম্পাদক ছিলেন ভিএস। ২৯ ডিসেম্বর ১৯৮৫ সালে তিনি সিপিআইএম পলিট ব্যুরোর সদস্য হন। ১২ জুন ২০০৯ সালে তাঁকে শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধে পলিট ব্যুরো থেকে অপসারণ করা হয়।
কেরালা বিধানসভায় ১৯৬৭, ১৯৭০, ১৯৯১, ২০০১, ২০০৬, ২০১১ এবং ২০১৬ সালে তিনি নির্বাচিত হন। কেরালা বিধানসভায় ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬, ২০০১ থেকে ২০০৬ এবং ২০১১ থেকে ২০১৬ – তিনবার তিনি বিরোধী দলনেতার দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে অচ্যুতানন্দন ১,৯৬৫ ভোটে পরাজিত হন। ফলে সেবার তাঁর নাম সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে থাকলেও তাঁর বদলে মুখ্যমন্ত্রী হন ই কে নায়নার। ২০০৬ সালে তিনি কেরালার মুখ্যমন্ত্রী হন। তিনিই ছিলেন কেরালার প্রবীণতম মুখ্যমন্ত্রী। ২০১৬ সালের নির্বাচনে ভি এস অচ্যুতানন্দন জয়ী হলেও পিনারাই বিজয়ন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী হন। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি ভি এস। তারপর থেকে সক্রিয় রাজনীতি থেকে তিনি সরে দাঁড়ান।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন