
লাদাখের উত্তপ্ত পরিস্থিতির জন্য কংগ্রেস কাউন্সিলর ফুন্টসোগ স্ট্যাঞ্জিন শেপাগের দিকে আঙুল তুলল বিজেপি। অবিলম্বে ওই কংগ্রেস নেতাকে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে গেরুয়া শিবির। ইতিমধ্যে ওই কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
লাদাখের লেফটেন্যান্ট গভর্নর কবিন্দর গুপ্ত এই সংঘর্ষকে ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন। পাশাপাশি হিংসার সাথে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। স্থানীয় পুলিশ ওই কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে।
লাদাখকে পূর্ণ রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করা এবং এই অঞ্চলকে সংবিধানের ষষ্ঠ তফশিলের অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছেন লাদাখের বাসিন্দা তথা খ্যাতনামা পরিবেশবিদ সোনম ওয়াংচুক। একসময় প্রধানমন্ত্রী মোদীর স্তুতি গাইলেও বর্তমানে তিনি ঘোরতর মোদী-সমালোচক। কেন্দ্র সরকারের লাদাখকে কেন্দ্র শাসিত আঞ্চল ঘোষণার সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধী তিনি। নিজেদের দাবির সমর্থনে গত কয়েকদিন দিন ধরে অনশন করছিলেন ওয়াংচুক। তাঁকে সমর্থন জানিয়েছিলেন স্থানীয়রা। এতদিন পর্যন্ত অহিংস থাকা এই আন্দোলন দুই অনশনকারী অসুস্থ হবার পরেই হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। পুলিশের সাথে সংঘর্ষে চার আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়। প্রায় ৭০ জন আহত।
বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এই অশান্তির জন্য রাহুল গান্ধীকে দায়ী করেছেন। এক বিবৃতিতে দুবে জানান, লাদাখে বিজেপির অফিসে আগুন লাগানো হয়েছে। এঁদের নেতা রাহুল গান্ধী এবং তাঁর জেন জি নেতা ফুন্টসোগ স্ট্যাঞ্জিন শেপাগ এই আন্দোলনের মূল মাথা।
তবে ওয়াংচুক বিজেপির দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, এই ঘটনার পিছনে কংগ্রেসের কোনও হাত নেই। কংগ্রেসের তেমন প্রভাব লাদাখে নেই যে তারা ৫০০০ যুবককে রাস্তায় নামাতে পারবে। যুবকদের দীর্ঘদিনের জমে থাকা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বুধবার।
অন্যদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক অবশ্য গোটা ঘটনার জন্য ওয়াংচুককে দায়ী করছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "অনেক নেতা ওয়াংচুককে অনশন প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করার পরেও, তিনি বিক্ষোভে উস্কানি দিয়েছেন। নেপালে জেন-জি বিক্ষোভের উল্লেখ করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন"।
প্রসঙ্গত, বুধবার পৃথক রাজ্যের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে লাদাখের লেহ শহর।আন্দোলন হিংসাত্মক হয়ে উঠলে পুলিশ গুলি চালায়। গুলিতে মৃত্যু হয় ৪ জনের। আহত কমপক্ষে ৭০ জন। এঁদের অনেকে বর্তমানে আইসিইউতে রয়েছেন। উত্তেজিত জনতা ভাঙচুর করে বিজেপি অফিস। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লেহ-তে কার্ফু জারি করা হয়। এই হিংসার ঘটনার পর সোনম ওয়াংচুক সাধারণ মানুষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান এবং অনশন প্রত্যাহার করে নেন। রাতের পর নতুন করে উত্তেজনার কোনও খবর এখনও পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার সোনম ওয়াংচুকের সঙ্গে অনশনরত দু’জনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। এরপরেই জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং বুধবার বনধের ডাক দেয়। বুধবারের এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয় লেহ অ্যাপেক্স বডি (LAB)। গুলিচালনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার কারগিলে বনধ পালন হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন