
দিল্লিতে শ্রেণীকক্ষ নির্মাণ প্রকল্পে ২০০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে! এই অভিযোগে ফের আইনি জটিলতায় জড়ালেন আপ (আম আদমি পার্টি) নেতা মনীশ সিসোদিয়া ও সত্যেন্দ্র জৈন। দিল্লি পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা (ACB) এই দুই প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা দায়ের করেছে এবং এই প্রকল্পে যুক্ত অন্যান্য ব্যক্তিদের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে।
আবগারি দুর্নীতির পর শিক্ষাক্ষেত্রেও দুর্নীতি করার অভিযোগ উঠলো মনীশ সিসোদিয়ার বিরুদ্ধে। এসিবি প্রধান মধুর ভার্মা জানিয়েছেন, অজ্ঞাতপরিচয় একাধিক সরকারি কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের ভূমিকা নিয়েও তদন্ত চালানো হচ্ছে। অভিযোগ, আপ সরকারের আমলে প্রায় ১২,০০০ শ্রেণীকক্ষ নির্মাণে পরিকল্পিতভাবে অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে প্রকল্পের বাজেট কয়েক গুণ বাড়ানো হয়েছে।
তৎকালীন উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া দিল্লি সরকারের শিক্ষা মন্ত্রকেরও দায়িত্বে ছিলেন এবং সত্যেন্দ্র জৈন ছিলেন পূর্ত দপ্তর (PWD)-এর মন্ত্রী। এই দুই মন্ত্রকের যৌথ তত্ত্বাবধানে শ্রেণীকক্ষ নির্মাণ প্রকল্পটি পরিচালিত হয়।
তদন্তে উঠে এসেছে, ৩৪টি ঠিকাদারি সংস্থাকে কাজের বরাত দেওয়া হয়, যাদের অধিকাংশের সঙ্গে আপ নেতাদের সরাসরি বা পরোক্ষ যোগ রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হওয়ায় ব্যয় অনেকটাই বেড়ে যায়। নির্মিত শ্রেণীকক্ষগুলি ছিল আধা-স্থায়ী কাঠামো (Semi-Permanent Structure), যেগুলি সর্বোচ্চ ৩০ বছর পর্যন্ত থাকবে অথচ ৭৫ বছরের স্থায়ী কংক্রিট ভবন নির্মাণের সমান ব্যয় হয়েছে।
এসিবির দাবি, নির্মাণ ব্যয় প্রতি বর্গফুটে ২,২৯২ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে, যা একটি পূর্ণাঙ্গ কংক্রিট ভবন নির্মাণের গড় ব্যয়ের কাছাকাছি। এমনকি কোনও নতুন টেন্ডার ছাড়াই প্রকল্পে অতিরিক্ত ৩২৬ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে।
তদন্তে আরও জানা গেছে, সঠিক নিয়ম-কানুন অনুসরণ না করে বেশ কয়েকজন স্থপতি ও পরামর্শদাতাকে নিযুক্ত করা হয়, যার ফলে প্রকল্পে খরচ বেড়েছে বহুগুণ। কেন্দ্রীয় নজরদারি কমিশনের (CVC) একটি পুরনো রিপোর্টে এই প্রকল্পে একাধিক অনিয়মের উল্লেখ থাকলেও, তা প্রায় তিন বছর ধরে গোপন রাখা হয়েছিল।
এই অভিযোগ সামনে আসার পর বিজেপির একাধিক নেতা মুখ খুলেছেন এবং আপ নেতাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন