বিহারে আসন্ন নির্বাচনে ভোট ‘চুরি’ করার জন্য নির্বাচন কমিশন বিজেপির সঙ্গে ‘গোপন আঁতাত’ করেছে। বুধবার এই অভিযোগ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ও আরজেডি বিধায়ক তেজস্বী যাদব। তাঁর আরও অভিযোগ, বিজেপি নেতাদের দুটো করে ভোটার কার্ড রাখার কাজে সহায়তা করছে কমিশন। তেজস্বী যাদবের প্রশ্ন, কীভাবে এই অসঙ্গতি হল? এর জন্য দায়ি কে বা কারা?
বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তেজস্বী জানান, এটা সত্যি যে নির্বাচন কমিশন বিজেপির সঙ্গে গোপন আঁতাত করে আসন্ন বিহার নির্বাচনে বিজেপিকে ভোট চুরিতে সাহায্য করেছে। বিহারে বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) করার পর যে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে তাকে ভোট ডাকাতি বলা উচিত। রাজ্যে বিজেপি নেতাদের দুটো করে ভোটার কার্ড রাখার কাজেও সহায়তা করছে নির্বাচন কমিশন।
এর আগে তেজস্বী যাদব রাজ্যের উপ মুখ্যমন্ত্রী বিজয় কুমার সিনহার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে বলেছিলেন রাজ্যের দুই কেন্দ্রে তাঁর দুটি আলাদা আলাদা ভোটার কার্ড আছে। এরপরেই তড়িঘড়ি বিজেপি নেতা বিজয় কুমার সিনহাকে নোটিশ পাঠায় কমিশন এবং তাঁকে আগামী ১৪ আগস্টের মধ্যে এই বিষয়ে উত্তর দিতে বলা হয়েছে।
বুধবার একইভাবে তেজস্বী অভিযোগ করেন, মুজফফরপুরের মেয়র নির্মলা দেবীর নামেও দুটি ভোটার কার্ড আছে। যে দুটির নাম্বার - REM1251917 এবং GSB1835164 এবং দুটি আলাদা আলাদা ভোটার কার্ডে তাঁর আলাদা আলাদা বয়স। তিনি আরও বলেন, বিহারে এসআইআর-এর পর যে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে তাতে মুজফফরপুরের মেয়র, যিনি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে সম্ভাব্য বিজেপি প্রার্থী তাঁর একই কেন্দ্রের দুটি আলাদা আলাদা বুথে আলাদা আলাদা ভাবে ভোটার তালিকায় নাম আছে। আশ্চর্যজনক ভাবে তাঁর দুই পারিবারিক সদস্যেরও একই কেন্দ্রের দুটি আলাদা আলাদা বুথে নাম আছে বলে দাবি করেন তেজস্বী যাদব।
তেজস্বী যাদবের আরও অভিযোগ, এখন গুজরাটের মানুষও বিহারের ভোটার হয়ে যাচ্ছেন। উদাহরণ হিসেবে ভিখুভাই দালসানিয়ার নাম উল্লেখ করে তেজস্বী বলেন, ইনি বিজেপির ভোটের দায়িত্বে। যার নাম আছে পাটনা কেন্দ্রে। এই ব্যক্তি ২০২৪-এ তাঁর শেষ ভোট দিয়েছিলেন গুজরাটে, যদিও এখনও তাঁর নাম পাটনায় আছে। গুজরাটে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল, যদিও দেখা যাচ্ছে তিনি জায়গা বদল করে ভোটদান শুরু করেছেন।
বিহারের এসআইআর প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তেজস্বী বলেন, “এসআইআর ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলছে এবং গতকাল যাদের নাম এসআইআর-এ মৃত হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিল তাদের আদালতে জীবিত পেশ করা হয়েছে। এটি একটি গুরুতর বিষয় যাকে মানুষ ভোট চুরি বলছে, কিন্তু বিজেপির নির্দেশে নির্বাচন কমিশন 'ভোট চুরি'তে যুক্ত হচ্ছে।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন