
কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের ১১ বছরের কাজের পর্যালোচনা করে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানালেন কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। তাঁর অভিযোগ, দেশের যুব সমাজের প্রতি প্রতারণা করছেন নরেন্দ্র মোদী।
বুধবার কর্ণাটকের কালাবুর্গিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মল্লিকার্জুন খাড়গে। সেখানেই নরেন্দ্র মোদী সরকারের ১১ বছরে ৩৩টি 'গুরুতর ভুল' তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন, “আমি এমন কোনও প্রধানমন্ত্রী দেখিনি যিনি এত মিথ্যে বলেন, মানুষকে ফাঁদে ফেলেন ও তরুণ প্রজন্মকে প্রতারিত করেন।”
খাড়গে বলেন, “১১ বছরে ৩৩টি ভুল হয়েছে। আমি সংসদে দাঁড়িয়ে বহুবার বলেছি - প্রধানমন্ত্রী মোদী এমন একজন ব্যক্তি যিনি ক্রমাগত মানুষকে ভুল পথে চালিত করেছেন। তিনি দরিদ্রদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট নিয়েছেন, কিন্তু তা বাস্তবায়ন করেননি।”
কংগ্রেস সভাপতি আরও বলেন, “নোটবাতিল, কর্মসংস্থান, এমএসপির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও তিনি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ১১ বছর কেটে গেছে। তিনি কোনও বিষয়েরই দায় স্বীকার করে বলেননি যে তিনি মিথ্যা বলেছেন এবং ভুল করেছেন, বা কখনও এর জন্য ক্ষমা চাননি।”
"আমি ৫৫ বছর ধরে ক্ষমতায় আছি এবং ৬৫ বছর ধরে রাজনীতিতে আছি - কিন্তু ওঁর মতো কেউ ছিল না", বলেন খাড়গে।
তিনি বলেন, "যখন কংগ্রেস এবং কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার ক্ষমতায় ছিল, তখন লোকসভার ডেপুটি স্পিকার পদের প্রস্তাব সবসময় বিরোধী দলকে দেওয়া হত। কিন্তু গত ১১ বছর ধরে এই পদটি খালি রেখেছে এনডিএ সরকার, যা বিরোধী দলগুলিকে গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় ভূমিকায় জড়িত করার ঐতিহ্য ভেঙে দিয়েছে। মোদীর এই পদক্ষেপ অবৈধ, অগণতান্ত্রিক। তিনি বিরোধী দলকে ডেপুটি স্পিকারের পদও দিতে চান না। এটি প্রমাণ করে যে গণতন্ত্রে তাঁর কোনও বিশ্বাস নেই।"
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০২৪ সালে তৃতীয়বারের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। ৯ জুন এনডিএ সরকার তাদের ১১তম বর্ষপূর্তি উদযাপন করে। মোদী সরকারের ১১ বছর পূর্তিতে খাড়গে সহ কংগ্রেসের একাধিক নেতা কেন্দ্রের বিভিন্ন গাফিলতি তুলে ধরে সরব হয়েছেন।
মোদী সরকারের ১১ বছরকে কটাক্ষ করেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী এক্স মাধ্যমে লেখেন, "মোদি সরকারের ১১ বছর - কোনও জবাবদিহি নেই, কোনও পরিবর্তন নেই, শুধুই প্রচার। সরকার ২০২৫ সালের কথা বলা বন্ধ করে এখন ২০৪৭ সালের স্বপ্ন বিক্রি করছে। আজ দেশ কীসের মুখোমুখি হচ্ছে সেটা কে দেখবে?"
কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বলেন, "তিনি (প্রধানমন্ত্রী মোদী) প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন 'আচ্ছে দিন'-এর। কোথায় 'আচ্ছে দিন'? প্রতি বছর দুই কোটি যুবক-যুবতীর জন্য কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই প্রতিশ্রুতির কী হল? নোটবন্দির ফলে কী হয়েছে? এতে কারা লাভবান হয়েছেন?"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন