
আরও বিপাকে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি ইউন সুক-ইওল। ৩ ডিসেম্বর দেশ জুড়ে সামরিক আইন (মার্শাল ল) জারি করে দেশবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন। আইনসভায় ভোটাভুটির মাধ্যমে বরখাস্ত (ইম্পিচমেন্ট) হওয়ার পরে ইউনের বিরুদ্ধে তদন্তও চলছিল।
এবার তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করল দক্ষিণ কোরিয়ার এক জেলা আদালত। শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রপতির বাসভবন তল্লাসিরও অনুমতি দিয়েছে আদালত। দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে এই প্রথম কোনও রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হল।
মূলত, সামরিক আইন (মার্শাল ল) জারি করার জন্যই আদালতের এই পদক্ষেপ। এমনটাই জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার উচ্চ-পদস্থ সরকারি আধিকারিকদের দুর্নীতি দমন অফিস (সিআইও)। তদন্তকারীদের পাঠানো সমনের সন্তোষজনক জবাব দিতে তিন তিনবার ব্যর্থ হয়েছেন ইউন সুক-ইওল। তাই আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
এই পরোয়ানার মেয়াদ ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতিকে রাজধানী সিওলের ডিটেনশন ক্যাম্পেও থাকতে হতে পারে। তবে, কখন বা কীভাবে ইউনের গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর হবে তা স্পষ্ট নয়।
রাষ্ট্রপতির নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীদের এড়িয়ে কীভাবে পুলিশ বাসভবনের তল্লাশি করবে অথবা গ্রেফতার করবে – সেই নিয়ে আইনি জটিলতা বাড়ছে। কারণ এর আগেও তদন্তের স্বার্থে পুলিশ রাষ্ট্রপতির বাসভবনে ঢুকতে চেয়েছিল। কিন্তু রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের আটকে দেয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টির ভারপ্রাপ্ত নেতা, কেওন সিওং-ডং মঙ্গলবার বলেছেন, একজন বর্তমান রাষ্ট্রপতিকে আটক করার চেষ্টা করা অনুচিত। অন্যদিকে, বিরোধী ডেমোক্রেটিক পার্টির আইন প্রণেতা কিম ইয়ং-মিন, বলেছেন “পরোয়ানা কার্যকর করার প্রক্রিয়া এবং তদন্ত খুব কঠিন হতে পারে। তদন্তকারীদের উচিত আদালতের নির্দেশ সঠিকভাবে পালন করা।”
৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার গভীর রাতে জাতির উদ্দেশ্যে এক ভাষণে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল সামরিক আইন (মার্শাল ল) ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘কমিউনিস্ট বাহিনী’-র থেকে জাতিকে রক্ষা করতে এবং রাষ্ট্রবিরোধীদেরকে দমন করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরপরেই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণ। বিরোধী রাজনৈতিক দল, শ্রমিক সংগঠন, ছাত্র সংগঠন, এমনকি সামরিক বাহিনীও রাষ্ট্রপতির এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন