• ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিরোধিতায় উত্তপ্ত লস এঞ্জেলস।
• বিক্ষোভ ছড়াচ্ছে অন্যান্য প্রদেশেও।
• ডোনাল্ড ট্রাম্পের পদক্ষেপকে বেআইনি বললেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর।
• লস এঞ্জেলস-এর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করলেন কমলা হ্যারিস।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে বেআইনি বলে জানালেন। গত ৮ মে লস এঞ্জেলস-এর বিক্ষোভ দমনে ক্যালিফোর্নিয়া ন্যাশনাল গার্ডকে পাঠানোর নির্দেশ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর এই পদক্ষেপকেই বেআইনি বলে জানিয়েছেন প্রদেশের ডেমোক্র্যাট গভর্নর গ্যাভিন।
গ্যাভিন নিউসম আরও বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই আদেশ “উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে উস্কানিমূলক”। কারণ লস এঞ্জেলসে বিক্ষোভ মোকাবিলায় নিরাপত্তাকর্মীর কোনও ঘাটতি ছিল না এবং ফেডারেল সরকার মানুষকে সন্ত্রস্ত করার জন্য সেনা পাঠাচ্ছে। গভর্নর নিউসম এবং লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে ন্যাশনাল গার্ডকে লস এঞ্জেলসে পাঠানোর আদেশ বাতিল করে ক্যালিফোর্নিয়ায় ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
লস এঞ্জেলস-এর পরিস্থিতির জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দায়ী করে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর বলেন লস এঞ্জেলস-এ ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করার আগে কোনো আলোচনা করেননি ট্রাম্প। ইতিমধ্যেই লস এঞ্জেলস-এর বিক্ষোভকারীদের সমর্থনে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে সান ফ্রান্সিসকোতেও। সেখানে অবৈধ জমায়েতের অভিযোগে কমপক্ষে ৬০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
লস এঞ্জেলস-এর ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন কমলা হ্যারিস। এক এক্স বার্তায় হ্যারিস বলেন, অন্যান্য অনেক আমেরিকানের মত লস এঞ্জেলস আমারও বাড়ি। এই শহরের রাস্তায় যা হচ্ছে তা দেখে আমি আতঙ্কিত। ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করে এখানে আরও বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি করা হচ্ছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক অভিবাসন নীতির বিরোধিতায় গত শনিবার থেকে উত্তাল হয়ে উঠেছে লস এঞ্জেলস। বহু সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। যে বিক্ষোভ দমন করতে ক্যালিফোর্নিয়ার ন্যাশনাল গার্ডকে লস এঞ্জেলসে পাঠিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানা গেছে, ওই বিক্ষোভে জড়িত থাকার অভিযোগে শনিবার ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলে এবং রবিবার গ্রেপ্তার হয়েছেন আরও ২৯ জন।
লস এঞ্জেলসে সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ মিছিলকে ‘বেআইনি জমায়েত’-এর তকমা দিয়েছে লস এঞ্জেলস পুলিশ। পুলিশের অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের দিকে ইটের টুকরো, বোতল ছুঁড়ছে। বিক্ষোভে লস এঞ্জেলস-এর একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা অবরুদ্ধ। বিক্ষোভ দমন করতে ন্যাশনাল গার্ড নামানোর পরেও পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। বরং বিক্ষোভকারীরা দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন।
শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হচ্ছে। ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিরোধিতায় বিক্ষোভের তৃতীয় দিনে এডওয়ার্ড আর রয়বাল ফেডারেল বিল্ডিং, মেট্রোপলিটন ডিটেনশন সেন্টার এবং ১০১ ফ্রিওয়ের কাছে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এখানে অবৈধ অভিবাসী সহ বেশ কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে।
অভিবাসন আইনজীবী মার্ক ক্রিস্টোফার সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন দমন অভিযানের "বর্বরতা" নিয়ে লস অ্যাঞ্জেলেসের মানুষ ক্ষুব্ধ। তিনি আরও বলেন, তারা মুখোশধারী সশস্ত্র ব্যক্তিদের দ্বারা নাগরিকদের তুলে নিয়ে যেতে দেখছে। যাদের অনেকেরই কোনও অপরাধমূলক কাজের রেকর্ড নেই। তারা দীর্ঘদিন ধরে এখানে রয়েছেন। তাদের অনেকেরই আবেদনপত্র USCIS [মার্কিন নাগরিক ও অভিবাসন পরিষেবা]-এর কাছে আটকে আছে।
তিনি আরও বলেন, সবথেকে বিরক্তিকর বিষয় হল শিশুদের হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শিক্ষকদের হেফাজতে নেওয়া হচ্ছে। তাই সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। এই বিক্ষোভের ওপর যেভাবে সশস্ত্র রক্ষী, ন্যাশনাল গার্ড এবং কাঁদানে গ্যাসের ব্যবহার করা হচ্ছে তাতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠবে। এই বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে।
Keywords: Los Angeles protests, Trump immigration policy, unrest spreads, Donald Trump, USA Immigration Policy