

যুবভারতীতে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা-কাণ্ডে আটক করা হল মেসির অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা তথা ক্রীড়া উদ্যোগপতি শতদ্রু দত্তকে। সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনটাই জানালেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার।
রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার জানান, "অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তাকে আটক করা হয়েছে। তাঁকে পুরো বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। দর্শকদের রাগ এবং ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে যুবভারতীতে। তদন্ত করে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দর্শকরা রিফান্ডের দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের কীভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।"
এডিজি আইন শৃঙ্খলা জাভেদ শামিম বলেন, এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলব না। ঘটনা ঘটা উচত ছিল না। তদন্তের পর কোথায় কী হয়েছিল তা জানা যাবে।
শনিবার যুবভারতী থেকে মেসি বেরিয়ে যাওয়ার পরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গ্যালারি। যার আঁচ মাঠেও দেখা গেল। গ্যালারি জুড়ে চেয়ার ভাঙা হয়েছে। যুবভারতীর শৌচাগারেও ব্যাপক ভাঙচুর চালায় উন্মত্ত দর্শক। ফুটবলারদের বেরনোর টানেলেও চলে ভাঙচুর। অগ্নিসংযোগ করা হয় মাঠে থাকা একাধিক সোফায়, মাঠের ধারে থাকা তাঁবুতে।
মেসিকে ভালো করে দেখতে না পাওয়ায় এই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। সংবাদমাধ্যমের সামনে ক্ষোভ উগরে দেন ক্ষুব্ধ দর্শকরা। এক মেসি ভক্ত বলেন, "ক্রীড়া উদ্যোগপতি শতদ্রু দত্ত সকলের আবেগের সাথে খেললেন। ম্যানেজমেন্ট খুবই বাজে। একবারও ঠিক করে মেসিকে দেখতে পাইনি। আমাদের টাকা নিয়ে খেলা হল। শতদ্রু দত্ত চোর। মধ্যবিত্ত ছেলেরা অনেক কষ্ট করে টাকা জমিয়েছিল। আর সেই টাকায় নেতা মন্ত্রীরা মেসির সাথে ছবি তুললেন।"
মাঠ থেকে বেরিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে এক দর্শক বলেন, শতদ্রু দত্তকে অবিলম্বে গ্রেফতার করা উচিত। আমাদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম মেসি কিছুক্ষণ থাকবেন। পুরো মাঠ ঘুরবেন। ২০২৫ সালের সবথেকে বড় স্ক্যাম করেছেন শতদ্রু দত্ত।
ইতিমধ্যেই একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। এক্স মাধ্যমে তিনি লেখেন, "আমি বিচারপতি (অবসরপ্রাপ্ত) অসীম কুমার রায়ের সভাপতিত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করছি, যার সদস্য হিসেবে থাকবেন মুখ্য সচিব এবং স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য বিষয়ক বিভাগের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব। এই কমিটি ঘটনাটির বিস্তারিত তদন্ত করবে, দায়বদ্ধতা নির্ধারণ করবে এবং ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের সুপারিশ করবে। আরও একবার, আমি সকল ক্রীড়াপ্রেমীর কাছে আমার আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি"।
উল্লেখ্য, এদিন মেসি যুবভারতীতে পৌঁছোতেই অন্তত ৭০-৮০ জন মানুষের ভিড় ঘিরে ধরে তাঁকে। মূলত মন্ত্রী, কর্তারাই ঘিরে ধরেন তাঁকে। জানা গেছে, তাঁকে ভাল করে হাঁটার জায়গাটুকুও দিচ্ছিলেন না কেউ কেউ! ক্যামেরা এবং মোবাইল হাতে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। গ্যালারি থেকে তাঁকে একদমই দেখা যাচ্ছিল না। এরপরই ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন সমর্থকরা।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন