* অভূতপূর্ব অভিযানের নজির সৃষ্টি করলেন ব্রিটিশ অভিযাত্রী Mitchell Hutchcraft
* ইংলিশ চ্যানেল থেকে অভিযান শুরু করে ৮ মাসে তিনি পৌঁছেছেন এভারেস্টের চূড়োয়।
* দীর্ঘ এই সময়ে তিনি সাঁতার, সাইক্লিং, দৌড়ে অতিক্রম করেছেন প্রায় ১৩ হাজার কিলোমিটার।
অভূতপূর্ব নজির সৃষ্টি করলেন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন রয়্যাল মেরিন কম্যান্ডার মিশেল হুচক্র্যাফট (Mitchell Hutchcraft)। ইংলিশ চ্যানেল থেকে যাত্রা শুরু করে তিনি তাঁর অভিযান শেষ করেছেন এভারেস্টের চূড়ায়। তাঁর এই অভিযানে মোট সময় লেগেছে ৮ মাস। যে সময়ে তিনি জল, স্থল এবং পাহাড় মিলিয়ে অতিক্রম করেছেন প্রায় ১৩ হাজার কিলোমিটার।
গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর ৩২ বছর বয়সী মিশেল তাঁর অভিযান শুরু করেন। অভিযানের শুরুতেই তিনি ৩৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ইংলিশ চ্যানেল পার করেন। এরপর ১১,৯২৯ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে ফ্রান্স থেকে ভারতে পৌঁছে পশ্চিমবঙ্গের দীঘায় আসেন। ভারত থেকে ৯০০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে তিনি পৌঁছান নেপালের কাঠমান্ডু এবং সেখান থেকে ৩৬৫ কিলোমিটার ট্রেক করে গত ১৬ এপ্রিল তিনি এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছান। রবিবার ১৬ এপ্রিল নেপালী সময় সকাল ৭টা ২০ মিনিটে তিনি এভারেস্টের চূড়ায় পা রাখেন।
২১ বছর বয়সে রয়্যাল মেরিনে যোগ দিয়েছিলেন হুচক্র্যাফট। সেখানে ৬ বছর যুক্ত থাকার পর ২০২১ সালে তিনি অব্যাহতি নেন। এরপরেই তিনি এই অভিযানের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। তাঁর টিমের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে সাগর থেকে পাহাড়ে পৌঁছাতে তিনি সবথেকে দীর্ঘতম পথ অতিক্রম করেছেন।
অভিযান শেষ হবার পর নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে হুচক্র্যাফট লিখেছেন, আমার ৮ বছর বয়স থেকে স্বপ্ন ছিল এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছানোর। …বহু বছরের প্রস্তুতির পর, দীর্ঘ ৮ মাস প্রবল শারীরিক কষ্ট উপেক্ষা করে আমি ইংলিশ চ্যানেল পার করি। এরপর ১৯ টি দেশের মধ্যে দিয়ে সাইক্লিং করি এবং ৯০০ কিলোমিটার দৌড়ানোর পর আমি এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছতে সক্ষম হই।
অভিযান শেষ করার পর তাঁর প্রয়াত বাবাকে স্মরণ করে হুচক্র্যাফট জানিয়েছেন, আমি আমার বাবাকে হারাই ১১ বছর আগে। কিন্তু এখনও আমার প্রতিটি পদক্ষেপে তিনি আমার সঙ্গে আছেন। আমি যা করেছি তা খুবই কঠিন ছিল। কিন্তু এই কঠিন অ্যাডভেঞ্চার পূর্ণ করতে পেরে আমি খুবই খুশি।
বর্তমানে ডেভনের টরকোয়া অঞ্চলে থাকেন মিচ হুচক্র্যাফট। এই অভিযানের আগেও তিনি একাধিক অভিযানে নেমেছিলেন। বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, এই সমস্ত অভিযানের মধ্যে ছিল আটলান্টিকে ৪,৮০০ কিলোমিটার রোয়িং এবং উত্তর আমেরিকা জুড়ে ৫০০০ কিলোমিটার সাইক্লিং।
তাঁর এবারের অভিযান ‘প্রোজেক্ট লিমিটলেস’ সম্পূর্ণ চিত্রায়িত করেছে তাঁর প্রোডাকশন টিম। যার কাজ শেষ হয়েছে তিনি এভারেস্ট জয় করে বেসক্যাম্পে ফিরে আসার পর।
বর্তমানে তিনি SAVSIM নামে একটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। তিনি এই সংস্থার জন্য তহবিল সংগ্রহ করছেন। এছাড়াও এই সংস্থা প্রবীণদের পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার এবং অনুরূপ সমস্যায় ভুগছেন এমন অন্যান্যদের মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তাও প্রদান করে।
নিজের অভিযান শুরুর আগে epigram.org.uk-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, "আমি একজন খুব সাধারণ সাঁতারু, আমি একজন খুব সাধারণ দৌড়বিদ, খুব সাধারণ সাইক্লিস্ট এবং আমরা এই প্রকল্পটি করছি এটা প্রমাণ করার জন্য যে অবিশ্বাস্য জিনিস অর্জনের জন্য আপনাকে সুপারম্যান হতে হবে না।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন