
৩৬ বছর বয়সে পেশাদার ফুটবল থেকে অবসর নিলেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার মার্সেলো ভিয়েরা দা সিলভা জুনিয়র। গোটা ফুটবল বিশ্ব যাঁকে মার্সেলো নামেই চেনে। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি আবেগঘন ভিডিও শেয়ার করে দীর্ঘ ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘোষণা করলেন।
নিজের শেয়ার করা ভিডিওতে মার্সেলো বলেন, "আমি একজন সাধারণ ছেলে হিসেবে এসেছিলাম এবং একজন পুরুষ হিসেবেই চলে যাচ্ছি। ফুটবল আমাকে যা দিয়েছে, তা আমি কখনোই ভুলব না।" তাঁর অবসর ঘোষণার পর দীর্ঘদিনের সতীর্থ ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো লেখেন, "তুমি শুধু একজন দুর্দান্ত খেলোয়াড়ই নও, বরং একজন অসাধারণ বন্ধু। রিয়াল মাদ্রিদে আমাদের সময়টা অসাধারণ ছিল।" শুধু রোনাল্ডোই নন, মার্সেলোর অবসরে বার্তা দিয়েছেন সার্জিও রামোস, টনি ক্রুস, করিম বেনজেমার মতো তাঁর প্রাক্তন সতীর্থরাও।
মার্সেলোর কেরিয়ারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ছিল রিয়াল মাদ্রিদে। যেখানে তিনি ১৬ বছর খেলেছেন এবং ক্লাবটির ইতিহাসে অন্যতম সফল ও সম্মানিত খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। ২০০৭ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে ফ্লুমিনেন্স থেকে রিয়ালে যোগ দেওয়া এই লেফট-ব্যাক ধীরে ধীরে ক্লাবের অপরিহার্য সদস্যে পরিণত হন। তাঁর দক্ষতা, গতি এবং আক্রমণাত্মক খেলার ধরণ রিয়াল মাদ্রিদের আক্রমণাত্মক স্টাইলের সাথে পুরোপুরি মানানসই ছিল।
রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে তিনি ২৫টি ট্রফি জিতেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য ট্রফিগুলির মধ্যে রয়েছে —
৫টি উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ (২০১৩-১৪, ২০১৫-১৬, ২০১৬-১৭, ২০১৭-১৮ এবং ২০২১-২২)।
৬টি লা লিগা শিরোপা (২০০৬-০৭, ২০০৭-০৮, ২০১১-১২, ২০১৬-১৭, ২০১৯-২০, ২০২১-২২)।
২টি কোপা দেল রে (২০১০–১১, ২০১৩-১৪)।
৫টি স্প্যানিশ সুপার কাপ।
৩টি উয়েফা সুপার কাপ।
৪টি ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ।
২০২২ সালে রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়ার পর, ইউরোপে তাঁর কেরিয়ার চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মার্সেলো। তিনি গ্রীসের অলিম্পিয়াকোস ক্লাবে যোগ দেন, কিন্তু সেখানে দীর্ঘ সময় থাকেননি। এরপর ২০২৩ সালে তিনি তাঁর ছোটোবেলার ক্লাব ফ্লুমিনেন্সে ফিরে আসেন। ফ্লুমিনেন্সে ফিরে তিনি কোপা লিবার্তাদোরেস ২০২৩ জেতার মাধ্যমে দক্ষিণ আমেরিকায় তাঁর কেরিয়ারের সমাপ্তি টানেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে, ফ্লুমিনেন্সের সাথে পারস্পরিক সমঝোতায় চুক্তি বাতিল করেন এবং অবশেষে তিনি ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দেন।
ব্রাজিলের জাতীয় দলের হয়ে মার্সেলো ৫৮টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। যদিও বিশ্বকাপ শিরোপা জিততে পারেননি, তবু দেশের হয়ে তিনি কিছু গুরুত্বপূর্ণ ট্রফি জিতেছেন—
২০১৩ ফিফা কনফেডারেশনস কাপ, ২০০৮ বেজিং অলিম্পিক - ব্রোঞ্জ পদক এবং ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকে রুপোর পদক জিতেছিলেন। তিনি ২০১৪ ও ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে ব্রাজিলের মূল দলের সদস্য ছিলেন, যেখানে তাঁর পারফরম্যান্স সকলের নজর কেড়েছিল।
আগামীদিনে ফুটবলের সাথেই যুক্ত থাকতে চান মার্সেলো। তিনি যুব ফুটবলারদের উন্নয়নে কাজ করতে চান এবং সম্ভবত কোচিং বা ফুটবল প্রশাসনে আসতে পারেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন