

বেস প্রাইস ছিল ৩০ লাখ টাকা। সেখান থেকে ১৪ কোটি ২০ লাখ টাকায় বিক্রি হওয়া কার্যত রূপকথার গল্পের মতো। আন ক্যাপড প্লেয়ার হিসেবে আইপিএল-এ রেকর্ড গড়ে চর্চায় এখন কার্তিক শর্মা। তবে এই সাফল্যের যাত্রাটা সহজ ছিল না। লড়তে হয়েছে তীব্র অভাবের সাথে। জমি, গয়না বিক্রি করে কার্তিককে খেলা চালিয়ে যেতে সাহায্য করেন তাঁর বাবা ও মা।
কার্তিক শর্মা এবং প্রশান্ত বীর এই দুই ক্রিকেটারের উভয়কে আইপিএল ২০২৬-র মিনি নিলামে ১৪ কোটি ২০ লাখ টাকা দিয়ে কিনেছে সিএসকে। আইপিএলে নির্বাচিত হওয়ার পর কার্তিক তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে নিজের শহর ভরতপুরে ফেরেন। খিরনি ঘাটের আগরওয়াল ধর্মশালায় তাঁকে উষ্ণ সংবর্ধনা দেওয়া হয়। শহরের বিশিষ্ট নাগরিকদের পাশাপাশি ভরতপুর জেলা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (বিডিসিএ)-এর সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
কার্তিকের বাবা মনোজ শর্মা বলেন, “আমাদের আয় সীমিত ছিল। কিন্তু আমার স্ত্রী রাধা ও আমি একটা স্বপ্ন দেখেছিলাম। যে করেই হোক কার্তিককে ক্রিকেটার বানাব ভেবে নিয়েছিলাম আমরা।”
ছেলের প্রশিক্ষণ ও টুর্নামেন্টের খরচ জোগাতে বিক্রি করতে হয় বাহনেরা গ্রামের জমি। কার্তিকের মা নিজের গয়না বিক্রি করে দেন ছেলের ক্রিকেট খেলার জন্য। মনোজ শর্মা বলেন, “জীবনের সেই সময়টা খুব কঠিন ছিল, কিন্তু আমরা কখনও কার্তিকের স্বপ্ন ভাঙতে দিইনি।”
কার্তিকের জীবনের অন্যতম স্মরণীয় মুহূর্ত আসে গোয়ালিয়রের একটি টুর্নামেন্টে। তাঁরা ভেবেছিলেন ৪-৫ ম্যাচ খেলেই দল টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাবে। কিন্তু কার্তিকের অসাধারণ ফর্মের কারণে দল ফাইনালে ওঠে। ততদিনে বাড়ি ফেরার টাকাও ছিল না। ফাইনাল জিতে পুরস্কার হিসেবে প্রাপ্য টাকা দিয়েই বাড়ি ফেরেন তাঁরা।
কার্তিকের প্রতিভা ছোটবেলাতেই নজরে আসে। মাত্র আড়াই বছর বয়সে ব্যাট হাতে এমন জোরে বল মারেন যে বাড়ির দুটি ফটোফ্রেম ভেঙে যায়। তাঁর বাবা বলেন, “সেই মুহূর্তেই আমরা বুঝেছিলাম, ও আলাদা কিছু করতে পারবে।”
উল্লেখযোগ্য বিষয়, মনোজ শর্মা নিজেও একসময় ক্রিকেটার ছিলেন, কিন্তু চোটের কারণে তাঁকে খেলা ছাড়তে হয়। তিনি বলেন, “আমি নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারিনি, তাই ঠিক করেছিলাম ছেলেই সেটা পূরণ করবে।”
কার্তিক শর্মার বয়স ১৯ বছর। তিনি রাজস্থানের হয়ে মিডল অর্ডারে (সাধারণত ৪ বা ৫ নম্বরে) ব্যাট করেন। ২০২৪-২৫ রঞ্জি ট্রফিতে তিনি মাত্র পাঁচটি ম্যাচে ১৬টি ছক্কা মারেন। সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফিতে তিনি আরও ১১টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন। রঞ্জি ট্রফিতে তাঁর ৩টি সেঞ্চুরিও রয়েছে।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন