
মর্মান্তিক গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব লিভারপুলের (Liverpool) তারকা স্ট্রাইকার দিয়োগো জোটা (Diogo Jota)। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল মাত্র ২৮ বছর। তাঁর ভাই আন্দ্রে সিলভাও (তিনিও একজন ফুটবলার, বয়স ২৫) এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। এই ঘটনায় ফুটবল জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর-পশ্চিম স্পেনের জামোরাতে। একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, দিয়োগো জোটা এবং তাঁর ভাই আন্দ্রে সিলভা ল্যাম্বোরগিনিতে ছিলেন। ওভারটেক করার সময় টায়ার ফেটে যাওয়ার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে। গাড়িটি দূরে ছিটকে গিয়ে আগুন ধরে যায়।
লিভারপুলের তরফ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, "লিভারপুল ফুটবল ক্লাব দিয়োগো জোটার মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকাহত। ক্লাবকে জানানো হয়েছে, ২৮ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় স্পেনে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। তাঁর ভাই আন্দ্রেও তাঁর সাথে ছিলেন। লিভারপুল এফসি এই মুহূর্তে আর কোনও মন্তব্য করবে না। সকলকে অনুরোধ, দিয়োগো ও আন্দ্রের পরিবার, তাঁর বন্ধুবান্ধব, সতীর্থ ও ক্লাব কর্মীদের গোপনীয়তা বজায় রাখুন। কারণ তাঁরা একটি অকল্পনীয় ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন। আমরা তাঁদের পূর্ণ সমর্থন প্রদান অব্যাহত রাখব"।
পর্তুগিজ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি দিয়োগোর মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করেছেন। তিনি জানান, "স্পেনে দিয়োগো জোটা এবং তাঁর ভাই আন্দ্রে সিলভার মৃত্যুতে পর্তুগিজ ফুটবল ফেডারেশন এবং সমগ্র পর্তুগিজ ফুটবল সম্পূর্ণভাবে শোকাহত। একজন অসাধারণ খেলোয়াড়ের চেয়েও অনেক বেশি ছিলেন তিনি। আমার পক্ষ থেকে এবং পর্তুগিজ ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে, দিয়োগো ও আন্দ্রে সিলভার পরিবার এবং বন্ধুদের, সেইসাথে লিভারপুল এফসির সমর্থকদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।"
তিনি আরও বলেন, "দিয়োগো এবং আন্দ্রের মৃত্যু পর্তুগিজ ফুটবলের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। পর্তুগিজ ফুটবল ফেডারেশন (PFF) ইতিমধ্যেই উয়েফার (UEFA) কাছে এই বৃহস্পতিবার, মহিলা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে স্পেনের সাথে আমাদের জাতীয় দলের ম্যাচের আগে এক মিনিট নীরবতা পালনের জন্য অনুরোধ করেছে।"
১৯৯৬ সালে পর্তুগালের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর পোর্তোতে জন্মগ্রহণ করেন দিয়োগো। ২০২০ সালে লিভারপুলের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন জোটা। তারপর থেকে ১২৩টি ম্যাচ খেলেছেন এই ক্লাবের হয়ে। ৪৭টি গোলও করেছেন। লিভারপুল ছাড়া তিনি পোর্তো, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের মতো বড় ক্লাবেও খেলেছেন। ক্লাব ফুটবলের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ফুটবলে পর্তুগালের জাতীয় দলের হয়ে ৪৯ ম্যাচে ১৪টি গোল রয়েছে তাঁর। তাছাড়া পর্তুগালের অনূর্ধ্ব-১৯, অনূর্ধ্ব-২১ এবং অনূর্ধ্ব-২৩ দলেও খেলেছেন তিনি।
লিভারপুলের হয়ে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন হন জোটা। এছাড়া উয়েফা নেশনস লিগ ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্যও ছিলেন তিনি। বর্ণময় কেরিয়ারের এইভাবে সমাপ্তি কেউ মেনে নিতে পারছেন না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন