
আফগানিস্তানের রুদ্ধশ্বাস জয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে বিদায় নিল ইংল্যান্ড। টানটান উত্তেজনার ম্যাচে ৮ রানে ইংল্যান্ডকে পরাজিত করল আফগানিস্তান এবং এখনও সম্ভাবনা জিইয়ে রাখলো। পাশাপাশি এদিনই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বিশ্ব রেকর্ড করলেন আফিগানিস্তানের ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৪৬ বলে ১৭৭ রান করলেন তিনি। যা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে সর্বাধিক রান।
চলতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই সর্বাধিক রানের রেকর্ড গড়েছিলেন ইংল্যান্ডের বেন ডাকেট। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১৬৫ রান করেছিলেন তিনি। বুধবার সেই রেকর্ড ভাঙলেন ইব্রাহিম। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে আজকের ম্যাচ জিততেই হবে দুই দলকে। 'ডু অর ডাই' ম্যাচকেই বেছে নিলেন রেকর্ড গড়ার জন্য। ৩৭ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর অধিনায়ক হাশয়াতুল্লাহ শাহিদি এবং ইব্রাহিম আফগানিস্তানকে খেলায় ফেরান। অধিনায়ক ৬৭ বলে ৪০ রান করে আউট হন।
৩১ বলে ৪১ রান করে আউট হন আজমাতুল্লাহ ওমরজাই। পরে মহম্মদ নবি ২৪ বলে ৪০ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন। ১৪৬ বলে ১৭৭ রান করেন ইব্রাহিম। তাঁর ইনিংসে ৬টি ছয় এবং ১২টি চার রয়েছে। প্রথম আফিগানিস্তানের ব্যাটার হিসেবে এই রেকর্ড গড়লেন তিনি। তাঁর পরেই আছেন বেন ডাকেট। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন নিউজিল্যান্ডের নেথন অ্যাস্টল। তিনি ২০০৪ সালে আমেরিকার বিরুদ্ধে অপরাজিত ১৪৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। এই তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছেন ইংল্যান্ডের অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার। ২০০২ সালে ভারতের বিরুদ্ধে ১৪৫ রান করেছিলেন তিনি। তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছেন সৌরভ গাঙ্গুলি। ২০০০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১৪১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
এছাড়া আফগানিস্তানের ব্যাটার হিসেবে একদিনের ক্রিকেটে সর্বাধিক রানের মালিকও হলেন ইব্রাহিম। এর আগে ১৬২ রান এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে। ২০২৩ সালে গুরবাজে করেছিলেন ১৫১ রান এবং আজমাতুল্লাহ ওমরজাই ১৪৯ রান করেছিলেন।
প্রথম ইনিংস শেষে ইব্রাহিম বলেন, আত্মবিশ্বাস ও শৃঙ্খলার কারণে এই রান করতে পেরেছি। আমি খেলার আগে কোচদের অনেক পরামর্শ নিই। রাশিদ খানের সাথে কথা বলি। রাশিদ অনেক পরামর্শ দেন। নেটে অতিরিক্ত সময় কাটাই। প্রচুর পরিশ্রম করেছি। মাথায় শুধু একটাই ভাবনা, দলকে জেতাতে হবে। তাছাড়া কিছুই ভাবিনি। প্রথমে ৪০ রান পর্যন্ত টার্গেট করেছিলাম। তারপর থেকে ৫০, ৬০, ৭০ এই ভাবে এগোতে থাকি। তাতেই সাফল্য এসেছে।
উল্লেখ্য, ৫০ ওভার শেষে আফিগানিস্তান ৭ উইকেট হারিয়ে ৩২৫ রান করে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই শুরুতেই ফিল সল্টের (১২) উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। প্যাভেলিয়নে ফেরেন জেমি স্মিথও (৯)। পর পর উইকেট পড়ায় ক্রমশ বাড়তে থাকে আস্কিং রেট। রশিদ খানের অনবদ্য ডেলিভারিতে এল বি ডব্লিউ হন বেন ডাকেট (৩৮)। প্রবল চাপের মুখে দলকে ভরসা যুগিয়ে ৯৮ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন জো রুট। যদিও তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। ১১১ বলে ১২০ রান করার পথে তিনি ১১টি চার ও ১টি ছয় মারেন। রুট ফিরে যাবার পর ওভারটন (৩২) ও আর্চার (১৪) দলকে কিছুটা এগোনোর চেষ্টা করেন। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ১৩। কিন্তু সেই রান তুলতে ব্যর্থ হয় ইংল্যান্ড। ৩১৭ রানে শেষ হয়ে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস। এদিন আফগানিস্তানের সেরা বোলার ছিলেন আজমাতুল্লাহ ওমারজাই (৫-৫৮)।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন