• সম্প্রতি বিশাখাপত্তনম স্টিল প্ল্যান্টে ৩০০০ চুক্তি শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে।
• শ্রমিক ইউনিয়ন জানিয়েছে আরও ১৮০০ কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
• বিরোধিতায় চলছে শ্রমিক বিক্ষোভ, ধর্মঘট।
• স্থানীয় সাংসদ এম শ্রীভরত জানিয়েছেন, কারখানাটিকে লাভে আনতে, শ্রমিক এবং ব্যবস্থাপনাকে একসাথে কাজ করতে হবে।
এক ধাক্কায় ৩০০০ চুক্তি শ্রমিককে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে আন্দোলনে উত্তাল বিশাখাপত্তনম স্টিল প্ল্যান্ট। যা রাষ্ট্রীয় ইস্পাত নিগম লিমিটেড (Rastriya Ispat Nigam Limited – RINL) নামেও পরিচিত। কারখানার শ্রমিক সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, লাগাতার আন্দোলন চললেও এখনও কর্তৃপক্ষর কাছ থেকে আশাব্যাঞ্জক কিছু শোনা যায়নি। শ্রমিক নেতৃত্বের আরও দাবি, এই আন্দোলন চলবে। জানা গেছে, ৩০০০ শ্রমিকের পর আরও ১৮০০ চুক্তি শ্রমিক ছাঁটাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষ।
শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কর্তৃপক্ষ সমস্ত চুক্তি ভিত্তিক শ্রমিককে বসিয়ে দিয়ে স্থায়ী শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টার বদলে ১২ ঘণ্টা করে কাজ করিয়ে নিতে চাইছে। সেই কারণেই ধাপে ধাপে চুক্তি ভিত্তিক শ্রমিক ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটছে স্টিল প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষ।
সিপিআইএম-এর স্থানীয় নেতা নরসিঙ্ঘা রাও জানিয়েছেন, গত ২৮ মে শ্রমিক আন্দোলন দমন করতে ব্যাপক সংখ্যায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ওইদিন সংস্থার প্রশাসনিক ভবনে আন্দোলন চলাকালীন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বহু শ্রমিক আহত হয় এবং অজ্ঞান হয়ে যায়। রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকার, দুই পক্ষই শ্রমিকদের হয়রানি করছে।
এই প্রসঙ্গে সিপিআইএম বিশাখাপত্তনম জেলা সম্পাদক এম. জগগু নাইডু বলেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ৫,৬০০ ঠিকাদার কর্মীকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ৩,০০০ কর্মীকে ইতিমধ্যেই বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই শ্রমিকদের অনেকেই কয়েক দশক ধরে এই কারখানায় কাজ করছেন এবং যদি তাদের বরখাস্ত করা হয় তবে তাদের পরিবার চরম সংকটে পড়বে। তিনি টিডিপি, জনসেনা পার্টি এবং বিজেপির সমালোচনা করে বলেন, যারা নির্বাচনের আগে এই ইস্পাত কারখানা রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তাদের সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে হবে।
শ্রমিকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে অন্ধ্রপ্রদেশ হিউম্যান রাইটস ফোরাম জানিয়েছে, বিশাখাপত্তনম স্টিল প্ল্যান্টের গত ৪০ বছরের ইতিহাসে আমরা কখনও এরকম ঘটনার সাক্ষী থাকিনি। এভাবে কখনও ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা হয়নি বা পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি। এভাবে শ্রমিক ছাঁটাই এবং আন্দোলনরত শ্রমিকদের শো-কজ করা সরাসরি ১৯৪৮ সালের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিসপুট অ্যাক্টের পরিপন্থী।
আন্দোলনকারী শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে স্থানীয় গাজুওয়াকার বিধায়ক পাল্লা শ্রীনিবাস রাও এবং বিশাখাপত্তনমের সাংসদ এম শ্রীভরতকে এই বিষয়ে মীমাংসা সূত্র খুঁজে পেতে হস্তক্ষেপের দাবি জানানো হয়েছে।
যে প্রসঙ্গে সাংসদ ভরত জানিয়েছেন, বিশাখাপত্তনম স্টিল প্ল্যান্টে শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়েছে এটা ঠিক.. তারা যতটা প্রয়োজন ততটা কর্মী রাখছে এবং বাকিদের ছাঁটাই করছে। প্ল্যান্ট ব্লাস্ট অ্যান্ড ফার্নেস থ্রি পুনরায় চালু করবেন.. তারপর প্রয়োজনে কিছু লোক নিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে.. কারখানাটিকে লাভে আনতে.. শ্রমিক এবং ব্যবস্থাপনাকে একসাথে কাজ করতে হবে বলেও তিনি জানান।
বিশাখাপত্তনম স্টিল প্ল্যান্ট (VSP) এর কর্পোরেট সত্তা রাষ্ট্রীয় ইস্পাত নিগম লিমিটেড (RINL) এর সমস্ত চুক্তিবদ্ধ ট্রেড ইউনিয়ন, শ্রম, বস্ত্র ও দক্ষতা উন্নয়ন সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান বাসবরাজ বোম্মাইকে চিঠি লিখে প্ল্যান্টে শ্রম-সম্পর্কিত সমস্যাগুলি নিয়ে আলোচনা করার আহ্বান জানিয়েছে।
গত মে মাসে বিশাখাপত্তনম স্টিল প্ল্যান্টে ১১,৫০০ স্থায়ী এবং ১২ হাজার চুক্তি শ্রমিক ছিল।
Keywords: Vizag Steel Plant layoffs, contract workers terminated, Visakhapatnam protests, RINL crisis, Vizag Steel unrest, CPIM
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন