
ক্যালেন্ডারে মাঘ মাস হলেও, শীত প্রায় বিদায় নিয়েছে। আর কয়েকদিন পরেই বসন্ত। এই হালকা শীতের আমেজে ঘুরে আসতে পারেন রাজধানী থেকে। কাছেই আগরার তাজমহল থেকে শুরু করে রয়েছে একাধিক ঐতিহাসিক জায়গা। দর্শনীয় স্থানের তালিকায় অবশ্যই রাখবেন রাষ্ট্রপতি ভবন। ২ ফেব্রুয়ারি থেকে সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতি ভবনের অমৃত উদ্যান, আগে যা পরিচিত ছিল মুঘল গার্ডেন হিসেবে। ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ - পর্যটকদের জন্য খোলা থাকবে অমৃত বাগান।
কী কী দেখার আছে?
প্রায় ১৫ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত রাষ্ট্রপতি ভবনের অমৃত উদ্যান প্রতি বছর নতুন করে সাজানো হয়। এছাড়া কিছু চিরকালীন আকর্ষণ রয়েছে। বাগানের অনেকগুলি ভাগ আছে। সেগুলির নাম – ইস্ট লন, সেন্ট্রাল লন, লং গার্ডেন এবং সার্কুলার গার্ডেন। একটি অংশে রয়েছে কেয়ারি করা দেশি এবং বিদেশি ফুলের বাগান। তাছাড়া, প্রতি বছর এই মরশুমে বিভিন্ন বিরল প্রজাতির ফুলে সাজানো থাকে অমৃত বাগান। রয়েছে জলাশয়, নানা রকম স্থাপত্য।
এছাড়া অমৃত উদ্যানে রয়েছে বাচ্চাদের মনোরঞ্জনের জন্য নানা রকম ব্যবস্থা। ছোটদের খেলার জায়গার নাম বাল বাটিকা। যেখানে রয়েছে ২২৫ বছরের পুরনো একটি শিশু গাছ, একটি গাছ-বাড়ি এবং প্রকৃতির সঙ্গে মিশে প্রকৃতিকে জানার একটি ক্লাসরুম।
ছোটদের বাগানের লাগোয়া রয়েছে বনসাই গাছের বাগান। যার আশেপাশে সাজানো রয়েছে বিরল প্রজাতির ফুল এবং ফলের বাগান। দেখা যাবে ফুলের ঘড়ি, ভার্টিকাল গার্ডেন, কিছু দূরে রয়েছে মিউজিক্যাল ফাউন্টেন। পর্যটকদের খাওয়াদাওয়ার জন্য রয়েছে ফুড কোর্টের ব্যবস্থা। এছাড়া ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত চলবে প্রদর্শনী। যা দেখতে পাবেন পর্যটকরাও। সুতরাং গোটা একটা দিন কাটিয়ে দেওয়া যায় বাগানে।
খাওয়াদাওয়ার কী ব্যবস্থা রয়েছে?
অমৃত উদ্যানে পর্যটকদের জন্য রয়েছে ফুড কোর্ট। যেখান থেকে খাবার কিনে খেতে পারেন সকলেই। প্রাতরাশ থেকে দুপুরে পেট ভরে খাবারের ব্যবস্থা। রয়েছে জলখাবারের ব্যবস্থাও। সেখানে রাজমা চাওল, কড়ি চাওল, ছোলে চাওল, পাওভাজি, ভেজ বিরিয়ানি, ফ্রায়েড রাইস, মাঞ্চুরিয়ান থেকে শুরু করে স্যান্ডউইচ, বার্গার, কেক, কচুরি, সিঙাড়া, জিলিপি, গুলাব জামুন, আইসক্রিম— সব ধরনের খাবার থাকে। থাকে চা-কফি, নরম পানীয়ের ব্যবস্থাও।
কখন যেতে পারেন?
সাধারণের জন্য ২ ফেব্রুয়ারি থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতি ভবনের অমৃত উদ্যান। ৩০ মার্চ পর্যন্ত খোলা থাকবে এই উদ্যান। সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে বিকেল ৫ টা ১৫ মিনিট থেকে অতিথিরা আর উদ্যানের ভিতরে প্রবেশ করতে পারবেন না। প্রতি সোমবার বন্ধ থাকবে অমৃত উদ্যান। বিনামূল্যে প্রবেশের জন্য রাষ্ট্রপতি ভবনের ৩৫ নম্বর গেট দিয়ে ঢুকতে হবে।
যাবেন কীভাবে?
রাষ্ট্রপতি ভবনের অমৃত উদ্যানে ঘুরতে গেলে বুকিং করতে হবে রাষ্ট্রপতি ভবনের ওয়েবসাইট থেকে। ওয়েবসাইটে গিয়ে অমৃত উদ্যানের লিঙ্কে ক্লিক করলেই খুলে যাবে বুকিং পেজ। যে যে তারিখে নির্ধারিত পর্যটকের সংখ্যা পেরিয়ে গিয়েছে, সেই তারিখগুলি সাদা রঙে চিহ্নিত থাকবে। আর সবুজ রঙের চিহ্ন থাকবে বুকিংয়ের জন্য। নিজের সুবিধা মতো তারিখ বেছে, কোন সময় যাবেন, কতজন যাবেন, বয়স কত – সবটা দিয়ে ক্লিক করলে একটি ওটিপি আসবে। ওটিপি দিলেই বুকিং করতে পারবেন অমৃত উদ্যান।
অতিরিক্ত ব্যবস্থা
· মোবাইল ফোন, ইলেকট্রনিক চাবি, পার্স, হ্যান্ডব্যাগ, জলের বোতল এবং শিশুদের দুধের বোতল নিয়ে ঢুকতে পারেন রাষ্ট্রপতি ভবনে।
· রাষ্ট্রপতি ভবনের ভিতরে রয়েছে পরিস্রুত খাবার জল, শৌচালয়, পাকিং, শাটল পরিষেবা, হুইল চেয়ার, জিনিসপত্র রাখার ঘর, বিশ্রামকক্ষ, প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা।
· ভবনের ভিতরে রয়েছে স্যুভেনিরের দোকানও। সেখান থেকে জিনস কিনতে পারবেন পর্যটকেরা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন