
হিন্দুকুশ হিমালয় অঞ্চলে কমছে তুষারপাতের পর মাটিতে সেই তুষার জমে থাকার পরিমাণ। আন্তর্জাতিক সংস্থা International Centre for Integrated Mountain Development (ICIMOD)-র প্রকাশিত ২০২৫ HKH স্নো আপডেট রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে। যা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে পরিবেশবিদদের।
সোমবার স্নো আপডেট রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে দাবি করা হয়েছে, হিন্দুকুশ হিমালয় (HKH) অঞ্চলে এই বছর শীতকালে মাটিতে জমে থাকা তুষারের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে ২৩.৬ শতাংশ কম ছিল, যা গত ২৩ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই নিয়ে টানা ৩ বছর স্বাভাবিকের তুলনায় কম তুষার জমেছে অঞ্চলটিতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হ্রাসপ্রাপ্ত তুষার গলন দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় দুই বিলিয়ন অর্থাৎ প্রায় ২০০ কোটি মানুষের জন্য জল সংকটের আশঙ্কা তৈরি করছে।
ICIMOD-এর ডিরেক্টর জেনারেল পেমা গ্যামতশো বলেন, “কার্বন নির্গমন ইতিমধ্যেই HKH-তে তুষারপাতে একটি বিপজ্জনক প্রবণতা সৃষ্টি করেছে। এখনই বিজ্ঞানভিত্তিক, দূরদর্শী নীতি ও আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা গড়ে তুলতে হবে।”
রিপোর্টে প্রধান বিশেষজ্ঞ শের মহম্মদ জানান, "আমরা ধারাবাহিকভাবে এই ধরনের ঘাটতি লক্ষ্য করছি। এটি খুবই উদ্বেগজনক বিষয়"।
বরফ জমে থাকার পরিমাণ কম হওয়ার ফলে ভারতের গঙ্গা নদী ও ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকাতেও প্রভাব পড়বে। গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদী অববাহিকায় যথাক্রমে ২৪.১ শতাংশ ও ২৭.৯ শতাংশ কম তুষারপাত হয়েছে। যা দু'দশকে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এর ফলে কৃষিকাজ ও জলের সরবরাহে গুরুতর প্রভাব পড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শুধু ভারত নয়। এর প্রভাব পড়বে চীন, পাকিস্তানেও। পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে সিন্ধু নদ। ২০২৪ সালের তুলনায় ২০২৫ সালে একটু বেশি তুষার জমলেও তা স্বাভাবিকের থেকে ১৬ শতাংশ কম বলেই জানানো হয়েছে।
ICIMOD সতর্ক করেছে, যদি এই প্রবণতা অব্যাহত থাকে, তবে এই অঞ্চলে ঘন ঘন জলের ঘাটতি দেখা দেবে এবং অঞ্চলটি খরার সম্মুখীন হবে। সংস্থাটি বিভিন্ন দেশের সরকারকে দ্রুত জল সঞ্চয়ের কৌশল, খরা ব্যবস্থাপনা এবং বৈজ্ঞানিক তথ্যের ভিত্তিতে সম্পদ ব্যবস্থাপনার আবেদন জানিয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন