

দক্ষিণ আফ্রিকার উপকূলে মৃত্যু হয়েছে ৬০,০০০-র বেশি আফ্রিকান পেঙ্গুইনের। বিশেষজ্ঞদের মতে খাদ্যাভাব এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই পরিণতি।
আফ্রিকান পেঙ্গুইনের খাদ্য মূলত সমুদ্রের সার্ডিন মাছ। গবেষণায় দেখা গেছে সার্ডিন মাছের ব্যাপক অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে খাদ্যাভাবের শিকার হয় পেঙ্গুইনগুলি। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে Ostrich: Journal of African Ornithology-এ।
২০০৪ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে ড্যাসেন আইল্যান্ড এবং রবেন আইল্যান্ডে বসবাসকারী আফ্রিকান পেঙ্গুইনের ৯৫ শতাংশেরও বেশি মারা যায়। গবেষকদের মতে, এদের বেশিরভাগই মারা গেছে তাদের বার্ষিক মোল্টিং বা পালক পরিবর্তনের সময়। সেই সময় পেঙ্গুইনরা কয়েক সপ্তাহ ধরে জলে নামতে পারে না এবং খাদ্যের জন্য সম্পূর্ণভাবে পূর্বে জমিয়ে রাখা চর্বির ওপর নির্ভর করে।
গবেষণা বলছে, জলবায়ু পরিবর্তন, সমুদ্রের জলের তাপমাত্রা ও লবণের মানের পরিবর্তন এবং অতিরিক্ত মাছ ধরার কারণে সার্ডিনের সংখ্যা ভয়াবহভাবে কমে গেছে। যা আফ্রিকান পেঙ্গুইনের প্রধান খাদ্য। এই সার্ডিন মাছ খেয়েই শরীর বাড়তি চর্বি জমিয়ে রাখে পেঙ্গুইনেরা।
ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটারের সেন্টার ফর ইকোলজি অ্যান্ড কনজারভেশনের ড. রিচার্ড শার্লে জানান, গত তিন দশকে এই প্রজাতির সংখ্যা ৮০ শতাংশ কমে গেছে, যা তাদের বিলুপ্তির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। পালক পরিবর্তনের সময় পর্যাপ্ত খাবার না পেলে তারা সমস্যায় পড়ে। এরপর অধিকাংশ সময় সমুদ্রে গিয়েই মারা যায়।
তিনি আরও বলেন, মূল খাদ্যভূমিতে সার্ডিনের পরিমাণ পুনরুদ্ধার করা না গেলে আফ্রিকান পেঙ্গুইনের দীর্ঘমেয়াদি বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।
এই প্রজাতিকে বাঁচাতে বিভিন্ন নয়া উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যেমন সিমেন্টের নকল পেঙ্গুইন তৈরি করে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্যযুক্ত অঞ্চলে বসানো হচ্ছে। আসল পেঙ্গুইনরা নকল পেঙ্গুইনগুলিকে দেখে সেই অঞ্চলে গেলে খাদ্যাভাবের সমস্যায় পড়বে না।
২০২৪ সালে আফ্রিকান পেঙ্গুইনকে ক্রিটিক্যালি এন্ডেঞ্জার্ড তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গবেষকদের আশঙ্কা, খাদ্যের ঘাটতি ও জলবায়ু সংকট অব্যাহত থাকলে আগামী এক দশকের মধ্যেই তারা বন থেকে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।