

‘কেরালা দিবসে’ (Kerala Piravi) কেরালাকে ‘চরম দারিদ্র্য মুক্ত’ (Extreme Poverty-free) রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। শনিবার রাজ্য বিধানসভার এক বিশেষ অধিবেশনে এই ঘোষণা করেন রাজ্যের বাম সরকারের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তিনি জানান, ভারতের মধ্যে কেরালাই প্রথম ‘চরম দারিদ্র্য মুক্ত’ রাজ্য।
এই প্রসঙ্গে সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক এম এ বেবী জানিয়েছেন, বিষয়টা এরকম নয় যে কেরালায় কোনও সমস্যা নেই। রাজ্যে একাধিক সমস্যা আছে এবং যে সমস্যার সমাধান করার জন্য সব রাজনৈতিক দলের এগিয়ে আসা উচিত। রাজ্যের বাম সরকারের পাশাপাশি এই পরিকল্পনায় সহায়তা করার জন্য তিনি রাজ্যের বিরোধীদেরও ধন্যবাদ জানান।
বেবী আরও জানান, সমস্যা নির্ধারণ করতে সরকারের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে সমীক্ষা করা হয়। ২০২১ থেকে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। সমীক্ষা রিপোর্ট থেকে ৬৪,০০৬টি পরিবারকে চিহ্নিত করা হয়, যারা চরম দারিদ্র্যের মধ্যে ছিলেন। তাদের স্বাস্থ্য, বাসস্থান, খাদ্য এবং জীবনজীবিকা সংক্রান্ত একাধিক সমস্যা ছিল। সরকার কোন পরিবারের কী সমস্যা তা চিহ্নিত করে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করে। দীর্ঘসময় ধরে সেই পরিকল্পনা অনুসারে কাজ করার পর এখন কেরালাই ভারতের প্রথম রাজ্য যেখানে কোনও পরিবার চরম দারিদ্র্যের মধ্যে নেই।
এই প্রসঙ্গে কেরালার মন্ত্রী এম বি রাজেশ জানিয়েছেন, নীতি আয়োগের এক সমীক্ষা জানিয়েছিলো কেরালার দারিদ্র্যের হার সবথেকে কম। মাত্র ০.৭ শতাংশ। এরপরেই কেরালা সরকার এই বিষয়ে নজর দেয় এবং কেরালাকে সম্পূর্ণ চরম দারিদ্র্যমুক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে।
রাজেশ গত ২২ অক্টোবর এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, সমীক্ষা চলাকালীন চিহ্নিত অতি দরিদ্র ৬৪,০০৬টি পরিবারের ১ লক্ষ ৩ হাজার ৯৯ জনের সঙ্গে সমীক্ষক দল কথা বলে।
যদিও কেরালা সরকারের এই দাবিকে ‘সম্পূর্ণ ভুয়ো’ বলে দাবি করেছে রাজ্যের বিরোধী দল কংগ্রেস। রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ভি ডি সতীশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী চরম দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রসঙ্গে যে বিবৃতি দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং সেই কারণে আমরা বিধানসভার আজকের বিশেষ অধিবেশন বয়কট করেছি।
যার উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন জানিয়েছেন, ইউডিএফ তাদের স্বভাব অনুসারেই মন্তব্য করেছে। আমরা যেটুকু করতে পেরেছি সেটুকুই বলেছি। আমরা যা বলেছি তা আগে করেছি। বিরোধী দলনেতাকে এটুকুই আমার উত্তর।
২০২১ সালের আগস্ট মাসে কেরালা জুড়ে চরম দরিদ্রদের চিহ্নিত করা এবং তাদের সহায়তা দেবার পরিকল্পনা নেয় বাম সরকার এবং ‘এক্সট্রিম পভার্টি ইরাডিকেশন প্রজেক্ট’ (ইপিইপি) নামক প্রকল্প চালু করা হয়। এই কাজে নেতৃত্ব দেয় স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন দপ্তর। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই ধর্মাদাম বিধানসভা কেন্দ্রে মোট ১৯৬টি পরিবারকে চিহ্নিত করা হয় এবং রাজ্য জুড়ে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাসকারী মোট ৬৪,০০৬ টি পরিবারকে চিহ্নিত করা হয়।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন