* পিনারাই বিজয়নের বিধানসভা কেন্দ্র ধর্মাদামকে চরম দারিদ্র্যমুক্ত বিধানসভা কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করল কেরালা।
* আগামী ১ নভেম্বর কেরালা রাজ্যকে চরম দারিদ্র্যমুক্ত রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
* ২০০১ সালে ৬৪০০২ জনকে চিহ্নিত করে এই বিশেষ প্রকল্প শুরু করে কেরালার বাম সরকার।
কেরালার কান্নুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ধর্মাদাম (Dharmadam) বিধানসভা কেন্দ্রকে রাজ্যের প্রথম চরম দারিদ্র্য মুক্ত বিধানসভা কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। রবিবার এক অনুষ্ঠানে তিনি এই ঘোষণা করেন এবং জানান বর্তমান বছরের ১ নভেম্বরের মধ্যে কেরালাকে চরম দারিদ্র্য মুক্ত হিসেবে ঘোষণা করার কাজ জোরকদমে চলছে। কেরালায় পিনারাই বিজয়নের নেতৃত্বে দ্বিতীয় বাম সরকারের আমলে ২০০১ সালে এই পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
রবিবারের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পিনারাই বলেন, আমরা তিন বছরে আগেই কেরালাকে চরম দারিদ্র্যমুক্ত করার বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলাম। এই লক্ষ্যে পৌঁছতে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন বিভাগ সহ অন্যান্য সব বিভাগ একযোগে সহায়তা করেছে।
কেরালার বাম সরকারের উদ্যোগে ২০২১ সালের আগস্ট মাসে রাজ্য জুড়ে চরম দরিদ্রদের চিহ্নিত করা এবং তাদের সহায়তা দেবার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। এই কাজে নেতৃত্ব দেয় স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন দপ্তর। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই ধর্মাদাম বিধানসভা কেন্দ্রে মোট ১৯৬টি পরিবারকে চিহ্নিত করা হয় এবং রাজ্য জুড়ে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাসকারী মোট ৬৪,০০২ জনকে চিহ্নিত করা হয়।
যে কোনো মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, স্বাস্থ্য এবং রোজগার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। চরম দারিদ্র্য দূরীকরণের ক্ষেত্রে কেরালাতেও প্রথম গুরুত্ব দেওয়া হয় এই মৌলিক বিষয়গুলির ওপরেই। রাজ্য সরকারের এক আধিকারিক এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে এই বিষয়গুলির ওপর জোর দিয়েই এই পরিবারগুলিকে চরম দারিদ্র্য থেকে বের করে আনা সম্ভব হয়েছে।
জানা গেছে, এই বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মোট ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত এই বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা নেয়। প্রাথমিক ভাবে এই পরিবারগুলিকে আধার কার্ড, রেশন কার্ড, ভোটার পরিচয়পত্র, জব কার্ড পেতে সহায়তা প্রদান এবং পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে ওই পরিবারগুলিকে যুক্ত করার কাজ করা হয়।
এছাড়াও ঘরের প্রয়োজন আছে এরকম ২৭টি পরিবারকে ‘লাইফ’ প্রকল্পের মাধ্যমে ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। ৪০ টি পরিবারকে ঘর সারাই করবার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ দেওয়া হয়। এছাড়াও এইসব পরিবারগুলির জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থা, খাদ্যের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি তাদের রোজগারের জন্য সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও সিপিআইএম নেতা পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, চরম দারিদ্র্যের মধ্যে থাকা মানুষদের জন্য খাদ্য, স্বাস্থ্য, বাসস্থান এবং আয়ের মতো মৌলিক চাহিদা পূরণের দিকে প্রথম লক্ষ্য রাখা হয়েছে। এটি মানুষের প্রতি ভালোবাসার এক মহৎ উদাহরণ।
নীতি আয়োগ প্রকাশিত ২০২১-এর মাল্টিডায়মেনশনাল পোভার্টি ইনডেক্স (MPI) অনুসারে সারা দেশের মধ্যে কেরালায় দারিদ্র্যের হার ছিল সবথেকে কম। মাত্র ০.৭১ শতাংশ।
ধর্মাদাম বিধানসভা কেন্দ্র -
প্রসঙ্গত, কেরালার ধর্মাদাম কেন্দ্র থেকে সিপিআইএম প্রার্থী হিসেবে ২০১৬ এবং ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে তিনি এই কেন্দ্র থেকে ৫০,১২৩ ভোটে (৫৯.৬১%) কংগ্রেস প্রার্থী সি রঘুনাথনকে (২৮.৩৩%) পরাজিত করেন। এই কেন্দ্রে সেবার বিজেপি পেয়েছিল ৯.১৩% ভোট। বর্তমানে কেরালার জনসংখ্যা আনুমানিক সাড়ে ৩ কোটি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন