
শিক্ষাক্ষেত্রে এক মাইলফলক ছুঁলো হিমাচল প্রদেশ। মিজোরাম, ত্রিপুরা এবং গোয়ার পর চতুর্থ রাজ্য হিসেবে পূর্ণ সাক্ষরতার মর্যাদা অর্জন করল হিমাচল। আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষ্যে শিমলায় আয়োজিত ‘উল্লাস মেলা ২০২৫’-এ মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু ঘোষণা করেন, রাজ্যের সাক্ষরতার হার পৌঁছেছে ৯৯.৩ শতাংশে।
এদিনের অনুষ্ঠানে কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সুখু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষক নিয়োগ বৃদ্ধি এবং পড়ুয়াদের বিদ্যালয়ে পৌঁছনোর সুযোগ সম্প্রসারণের মতো ধারাবাহিক উদ্যোগই এই সাফল্যের ভিত গড়ে দিয়েছে। তিনি আরও দাবি করেন, বর্তমানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাতের নিরিখে হিমাচল সারা দেশে শীর্ষে রয়েছে, যা শিক্ষার মানোন্নয়নের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সূচক।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, এখন লক্ষ্য সরকারি বিদ্যালয়গুলিকে ‘সেন্টার অব এক্সেলেন্স’-এ রূপান্তর করা এবং আধুনিক শিক্ষার চাহিদা মেটাতে নতুন সংস্কার চালু করা। শিক্ষামন্ত্রী রোহিত ঠাকুর জানিয়েছেন, নীতি সংস্কার ও বিদ্যালয়ে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ফলে হিমাচলে স্কুলছুট শিক্ষার্থীর হার কার্যত শূন্যে নেমে এসেছে।
এবিষয়ে শিক্ষা সচিব রাকেশ কানওয়ার জানিয়েছেন, এই সাফল্য সরকারের একার নয়। নারী স্বনির্ভর গোষ্ঠী, যুব সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং স্থানীয় শিক্ষকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই সাক্ষরতা আন্দোলনকে সফল করেছে। অনেক নতুন সাক্ষর মানুষ এবং স্বেচ্ছাশিক্ষক এদিন নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন, যা প্রমাণ করে যে সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণই রাজ্যের শিক্ষা আন্দোলনের আসল চালিকাশক্তি।
তবে জাতীয় স্তরে এখনও অনেক কাজ বাকি। জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের (NSSO) ২০২৩-২৪ সালের পিরিয়ডিক লেবার ফোর্স সার্ভে (PLFS) অনুসারে, ভারতে সাত বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৮০.৯ শতাংশ। এবং পাঁচ বছর বা তার বেশি বয়সীদের মধ্যে এই হার ৭৯.৭ শতাংশ।
অধিকর্তারা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতের শিক্ষা-চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ চলবে। রাজ্য সরকার আশাবাদী, এই ধারাবাহিক প্রচেষ্টা হিমাচলকে সাক্ষরতা ও শিক্ষার মানের দিক থেকে দেশের অগ্রভাগে রাখবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন