
বিহারের যুবকদের মধ্যে একটা বড়ো অংশই রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তেজস্বী যাদবকেই চাইছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত এক জনমত সমীক্ষায় এই তথ্য সামনে এসেছে। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী যুব ভোটারদের মধ্যে প্রায় ৪২ শতাংশ রাজ্যের আগামী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তেজস্বী যাদবের পক্ষে মত দিয়েছেন। চলতি বছরের অক্টোবর-নভেম্বর মাসে বিহার বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই সমীক্ষায় জন সূরজ পার্টির পক্ষে সেভাবে জনমত লক্ষ্য করা যায়নি।
জনমত সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩৯ শতাংশ মানুষ বিহারের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তেজস্বী যাদবকে দেখতে চেয়েছেন। উল্টোদিকে ৩৪ শতাংশ মানুষ বিহারের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আবারও নীতিশ কুমারকেই দেখতে চেয়েছেন। ইঙ্কইনসাইট (InkInsight)-এর করা সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় এই তথ্য সামনে এসেছে।
সমীক্ষার ফলাফল অনুসারে, ৩০ থেকে ৩৯ বছর বয়সী ভোটাররা এবং ৬০ বছর বয়সের ঊর্ধ্বের ভোটাররা তেজস্বী যাদবকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চেয়েছেন। যদিও ৪০ থেকে ৪৯ বছর এবং ৫০ থেকে ৫৯ বছর বয়সীদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চাইছেন নীতিশ কুমারকে।
তবে অল্পবয়সী ভোটারদের ৪২ শতাংশ তেজস্বী যাদবকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাইলেও, বিহারের ৪৫ শতাংশ মহিলা নীতিশ কুমারকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চেয়েছেন এবং ৪৫.৮ শতাংশ পুরুষ তেজস্বী যাদবকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চাইছেন।
সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী যুবদের মধ্যে সম্মিলিতভাবে ৪৪.৬ শতাংশ এনডিএ সরকারের পক্ষে মত দিয়েছেন। ৩৯.৫ শতাংশ যুব ভোটার জানিয়েছেন এই মুহূর্তে ভোট হলে তাঁরা মহাগঠবন্ধনের পক্ষে ভোট দেবেন। অন্যদিকে মাত্র ০.৭৬ শতাংশ যুব জানিয়েছেন তাঁরা ভোট দিতে পারেন প্রশান্ত কিশোরের জন সূরজ পার্টিকে।
মুখ্যমন্ত্রী পদের মুখ হিসেবে ১৮-২৯ বছর বয়সী প্রায় ৪২% মানুষ জানিয়েছেন তেজস্বী যাদবকে বিহারের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী করা উচিত। অন্যদিকে, ২৭.৭% মানুষ নীতীশ কুমারকে পছন্দ করেছেন। প্রায় ২% প্রশান্ত কিশোর, ৭% চিরাগ পাসওয়ান, ১.৬১% সম্রাট চৌধুরী এবং ১৩.৩৯% মুখ্যমন্ত্রী পদে বিজেপি থেকে নতুন মুখ দেখতে চান।
বিহারের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে এই নিয়ে দ্বিতীয় জনমত সমীক্ষা অনুষ্ঠিত হল। এর আগের জনমত সমীক্ষা করেছিল সি-ভোটার। এর আগের সমীক্ষাতেও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রাজ্যের মানুষের প্রথম পছন্দ ছিলেন তেজস্বী যাদব। ওই সমীক্ষায় দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন জন সূরজ পার্টির প্রশান্ত কিশোর এবং তৃতীয় স্থানে ছিলেন এনডিএ শিবিরের নীতিশ কুমার। যদিও এবারের সমীক্ষাতে তৃতীয় স্থানে নেমে গেছেন প্রশান্ত কিশোর।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইন্ডিয়া টুডে-সি ভোটারের সমীক্ষার পর সি ভোটারের ডিরেক্টর যশবন্ত দেশমুখ জানিয়েছিলেন, “বিহার এমন একটি রাজ্য যেখানে ভোটদানের ধরণ সম্পূর্ণরূপে গাণিতিকভাবে পরিচালিত। বিহারে দিল্লির মতো বিভক্ত ভোট নেই। যদি বিজেপি, নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ) এবং চিরাগ পাসওয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি) ঐক্যবদ্ধ থাকে, সেক্ষেত্রে ‘মহাগঠবন্ধন’ কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার সামনে পড়বে।”
বর্তমান সমীক্ষা সম্পর্কে ইঙ্কইনসাইট জানিয়েছে, এই সমীক্ষা ‘বিহারের প্রথম এবং বৃহত্তম জনমত সমীক্ষা’। এই সমীক্ষায়, বিহারের ২৪৩টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ১৯৪টি আসনের ৫,১৪৫ জন অংশগ্রহণ করেছেন। ১ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল, ২০২৫-এর মধ্যে এই সমীক্ষা করা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন